ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নড়িয়ায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ইতালি প্রবাসীর মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
নড়িয়ায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ইতালি প্রবাসীর মৃত্যু

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে চাঁন মিয়া হাওলাদার (৩২) নামে এক ইতালি প্রবাসীর মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে নিজ গ্রামের পাশের বাড়িতে মারা গেছেন বলে পারিবারিক সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে।



স্থানীয়রা উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া জালুয়াহাটি এলাকার ফজল হক হাওলাদারের ছেলে।

নিহতের মরদেহ পালং থানা পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

নড়িয়া থানা ও সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, চাঁন মিয়া দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবত ইতালি বসবাস করেন। সেখানে নড়িয়া উপজেলার চাকধ গ্রামের রুবেল পেদার সঙ্গে তার কোন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এ ঘটনার জের ধরে এদের দুইজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত প্রায় ১ মাস আগে চাঁন মিয়া হাওলাদার বাড়ি আসেন। এদিকে রুবেল পেদাও বাড়ি আসেন। গত ৪/৫ দিন আগে চাঁন মিয়া হাওলাদার পাসপোর্টের কাজে নড়িয়া উপজেলা সদরে গেলে সেখানে চাঁন মিয়াকে একা পেয়ে রুবেল ও তার সহযোগীরা মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন। এ ঘটনার জের ধরে সোমবার (২১ মার্চ) নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার বাজারে রুবেল ও তার সহযোগীদের পেয়ে চাঁন মিয়া ও তার সমর্থকরা মারধর করে। এ ঘটনার পর রুবেল পেদা বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। নড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মঙ্গলবার সকাল অনুমান ১১টায় চাঁন মিয়াদের গ্রামের বাড়ি নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণপাড়া জালুয়া হাটি গ্রামে যায়। সেখানে যাওয়ার পর পুলিশ দেখে লোকজন ছুটোছুটি করে। চাঁন মিয়া দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে। পুলিশ আসামিদের পিছু ধাওয়া করে। এ সময় চাঁন মিয়া পালাতে গিয়ে পাশের বাড়ির বাগানের মধ্যে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে মারা যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত চাঁন মিয়া এক সন্তানের জননী। তার ৫ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তার নাম হুজাইফা।  

নিহতের স্ত্রী পারুল বেগম বলেন, আমার স্বামীর সঙ্গে ইতালিতে দ্বন্দ্বের কারণে রুবেল নড়িয়া বাজারে মারধর করেছেন। আমার স্বামীকে পুলিশ ধাওয়া করলে তিনি মাটিতে পড়ে মারা যায়। আমি এর বিচার চাই।  

নিহত চাঁন মিয়ার ভাই জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, পুলিশ আমার ভাইকে ধরার জন্য ধাওয়া করলে পাশের বাড়ির বাগানে পড়ে আমার ভাই মারা গেছেন। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।

এ ব্যাপারে নড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেনকে বার বার তার মোবাইলফোনে কল দিলে ও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেয়।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি শংকর কর বাংলানিউজকে বলেন, আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। এ ঘটনার পর আমি এসআই ইকবালকে জানতে চাই কী হয়েছে। তিনি বলেছেন একটি জিডির অনুকূলে আমি ঘটনাস্থলে তদন্তে যাই। আমাদের দেখে চাঁন মিয়াসহ লোকজন দৌড়ে পালায়। আমি একটু পরে চলে আসি। পরে জানতে পারি চাঁন মিয়া হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। এরপর আমি ঘটনাস্থলে যাই। ভালোভাবে তদন্ত করে ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।