ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী রোববার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী রোববার এ কে এম শামসুজ্জোহা

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক এ কে এম শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি)। তিনি ছিলেন একাধারে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণপরিষদের সদস্য ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে জাতীয় সংসদের সদস্য।

এ কে এম শামসুজ্জোহা দেশের অন্যতম ঐহিত্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম জননেতা খান সাহেব ওসমান আলীও ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাবেক এমএনএ।

ঐতিহ্যবাহী এই পরিবারের আদি নিবাস নারায়ণগঞ্জের ‘বায়তুল আমান ভবন’ আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার বীজবপন করা হয়েছিল। মহান ভাষা আন্দোলনের সময় এই বায়তুল আমান ভবনে পুলিশ প্রবেশ করে ওসমান পরিবারের সদস্যদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তেও উঠে এসেছে ভাষা আন্দোলনে বায়তুল আমান ভবন এবং ওসমান পরিবারের ত্যাগের কথা।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থী শিবিরে মরহুম শামসুজ্জোহা ‘ত্রাণবন্ধু’ নামে পরিচিত ছিলেন। প্রয়াত এই জননেতা সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে বিজয়ের বার্তা প্রচার করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। ওই দিন বিকেলে তিনি বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের একটি সুধী সমাবেশে সেই ঘটনাটি নিজ মুখে বর্ণনা করেছিলেন এবং মহান জাতীয় সংসদেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা স্মরণ করে বক্তব্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীকে গর্বিত করেছিলেন।

এ কে এম শামসুজ্জোহার বড় ছেলে প্রয়াত জননেতা ও সাবেক এমপি নাসিম ওসমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট নবপরিণীতা বধূকে রেখেই প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর শামসুজ্জোহাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতার হত্যাযজ্ঞের সময় তিনি ও শহীদ জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর আলী কারাগারে একই সেলে বন্দি ছিলেন। তিনি ছিলেন ওই কলঙ্কিত ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী।

প্রয়াত শামসুজ্জোহার মেঝ ছেলে বিএমইএ’র সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান ও ছোট ছেলে এ কে এম শামীম ওসমান একাধিকবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রয়াত শামসুজ্জোহাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়। শামসুজ্জোহার সহধর্মীনি ও রত্নগর্ভা প্রয়াত নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা সৈনিক। তিনি ২০১৬ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

এ কে এম শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের পরিবার ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন দিনভর কর্মসূচি পালন করবে। রোববার দিনব্যাপী পবিত্র কোরআন খানি, শোক র‌্যালি, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারতের পাশাপাশি মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে চাষাড়াস্থ ‘হীরা মহলে’ বাদ আছর প্রয়াত এ কে এম শামসুজ্জোহা ও প্রয়াত বেগম নাগিনা জোহার রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

মরহুমের মেঝ ছেলে সেলিম ওসমান এমপি ও ছোট ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম শামীম ওসমান এমপি সবাইকে রুহের মাগফেরাত কামনায় চাষাড়াস্থ পৈতৃক বাড়ি হীরা মহল ও পাশ্ববর্তী মসজিদে বাদ আছর আয়োজিত মিলাদ ও দোয়ায় অংশ নেওয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।