ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চাকরির প্রলোভনে তরুণীদের বিদেশে পাচার করতেন তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
চাকরির প্রলোভনে তরুণীদের বিদেশে পাচার করতেন তারা নারী পাচার চক্রের তিন সদস্য

ঢাকা: কমবয়সী ও সুন্দরী মেয়েদেরকে টার্গেট করে বিভিন্ন দেশে পাচার করে আসছিল আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী একটি চক্র। চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন দুবাইয়ে অবস্থানরত মহিউদ্দিন (৩৭) ও শিল্পী (৩৫)।

তারা চট্টগ্রামের বাসিন্দা।

র‌্যাব জানিয়েছে, মানবপাচারকারী চক্রটি এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন নারীকে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিনা টাকায় দুবাই, সৌদি আরব, ওমানসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। সেখানে দালালদের কাছে তাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে জোরপূর্বক বিভিন্ন ডিজে পার্টিসহ অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত করা হয়।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উত্তরা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে গত রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে চক্রের তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-১। সে সময় তাদের হেফাজত থেকে  তিন ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-  মো. আজিজুল হক (৫৬), মো. মোছলেম উদ্দিন ওরফে রফিক (৫০) ও মো. কাউছার (৪৫)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিনটি পাসপোর্ট, তিনটি মোবাইল ফোন ও নগদ ২৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন

আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের টার্গেট ছিল দরিদ্র মানুষ। পাচারকারীরা ভালো বেতনে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সহজ-সরল মানুষদেরকে ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। তাদের পাতা জালে জড়িয়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন এসব মানুষ, যার অধিকাংশই নারী। পাচারের পর এসব নারীকে বিক্রি করে দিত চক্রটি। তারপর জোরপূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টি, দেহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

মানবপাচার চক্রের মূলহোতা মহিউদ্দিন ও শিল্পী বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুবাইয়ে অবস্থান করে তারা নারীদের পাচারের পরিকল্পনা করেছে বলে গ্রেফতার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এছাড়া চক্রের পলাতক সদস্য নোয়াখালীর নূর নবী ওরফে রানা (৩৫) ও ঢাকার মনজুর হোসেন (৩৩) মানবপাচারকারী চক্রের দেশীয় মূলহোতা।

তিনি বলেন, গ্রেফতার আজিজুল হক এই চক্রের অন্যতম সমন্বয়ক। তার মাধ্যমে দুবাইয়ে অবস্থানরত মহিউদ্দিন নারীদের বিদেশে পাচারের খরচের টাকা পাঠাতো। চক্রের পলাতক নারী সদস্য তাহমিনা বেগম (৪৮) ও গ্রেফতার রফিক ও কাউছার কমবয়সী ও সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করে প্রলোভন দেখাতো। এরপর বিভিন্ন কোম্পানি ও গার্মেন্টসে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের বিদেশ যেতে প্রলুব্ধ করত। কোনো তরুণী বিদেশ যেতে রাজী না হলে বিভিন্নভাবে হুমকিও দিত তারা। এই চক্রে নারীসহ একাধিক সদস্য পাচারকারীদের সঙ্গে কাজ করছে।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।