ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সেতু থাকলেও ৬ বছর ধরে যাতায়াত বন্ধ

আব্দুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২
সেতু থাকলেও ৬ বছর ধরে যাতায়াত বন্ধ সেতু আছে এপ্রোস সড়ক নেই। ছবি: বাংলানিউজ

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার মদন উপজেলার ১২টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতু নির্মাণ করা হলেও তা মোটেও কাজে আসছে না। দুই পাশে এপ্রোস সড়কের মাটি সরে যাওয়ায় ৬ বছর ধরে সেতুটির ওপর দিয়ে যান চলাচলসহ লোকজনের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে।

এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।  

নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের খুড়াইখালী খালের ওপর নির্মিত হয় সেতুটি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে সেতুটি বর্তমানে অকেজো হয়েছে রয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।  

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়নের ১০/১২টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০১২/১৩ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রালয়ের অর্থায়নে ২৬ লাখ ২ হাজার ৩৬ টাকা ব্যয়ে দৌলতপুর-বারেউড়া সড়কের খুড়াইখালী খালের ওপর সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি নির্মাণের পর থেকে দুই পাশের এপ্রোসের মাটি সরে গেলেও নজরে আসেনি এলাকার জনপ্রতিনিধি বা কর্তৃপক্ষের।
 

স্থানীয় এলাকাবাসী একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দৌলতপুর-বারেউড়া সড়কটি তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়নের ১০/১২টি গ্রামের সংযোগ সড়ক। দুই কিলোমিটার সড়ক প্রায় ২৫ হাজার মানুষের মাঝে সর্ম্পক গড়ে তুলেছে। এই সড়কের যাতায়াতের সুবিধার্থে খুড়াইখালী খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কয়েক বছর পরই এপ্রোসের মাটি সরে অকেজো হয়ে পড়েছে সেতুটি। ফলে সেতুটি কাজে আসছে না এ রাস্তার যাতায়াতকারী লোকজনদের। যাতায়াতকারীরা আর কোনো উপায় না পেয়ে সেতুটির পাশের ফসল রক্ষা বাঁধের স্লুইচ গেট দিয়ে চলাচল করছেন। যান চলাচলের ফলে স্লুইচ গেটটি হুমকির মুখে পড়ায় এলাকার কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া রাস্তায় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সেতু ও রাস্তার বেহাল অবস্থা দূরীকরণের জন্য কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয় লোকজন।  

দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা রিকন মিয়া, আজিদ মিয়া, আবুল, সাফায়েতসহ অনেকেই জানান, তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়নে ২০/২৫ হাজার মানুষ দৌলতপুর-বারেউড়া সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। কয়েক বছর ধরে খুড়াইখালী খালের সেতুটির এপ্রোসের মাটি না থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন লোকজন। পাশের ফসল রক্ষার বাঁধের স্লুইচ গেট দিয়ে যানবাহনসহ লোকজন যাতায়াত করছে। এতে স্লুইচ গেটটি হুমকির মুখে পড়েছে। সেতুটির এপ্রোসের মাটি দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।  

অটোরিকশাচালক কাশেম মিয়া, নিজাম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বারেউড়া থেকে কালীবাড়ী মোড়, বালালী বাজার ও তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। সেতুর সংযোগ সড়কে মাটি না থাকায় গাড়ি নিয়ে যেতে পারি না। মদন হয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদে যেতে পাঁচ কিলোমিটারের জায়গায় ৩০/৩৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এখন স্লুইচ গেট দিয়ে কোনো রকম চলাচল করা যাচ্ছে। সেতুটির সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিয়শ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ বলেন, দৌলতপুর-বারেউড়া আমার ইউনিয়নের ১০/১২ গ্রামের একমাত্র সড়ক। এই সড়কটির খুরাইখালী খালের সেতুটির এপ্রোসের মাটি না থাকায় অকেজো হয়ে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি। লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতুটির এপ্রোসে মাটি ভরাটের জন্য দাবি জানাচ্ছি।  

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল জানান, দীর্ঘদিন আগে খুড়াইখালী সেতুটির দুই পাশে এপ্রোসের মাটি সরে গেছে। এ বছর বরাদ্দ দিয়ে সেতুটির এপ্রোসের মাটি ভরাট করা হবে।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ জানান, ত্রাণের অধিকাংশ সেতুর এপ্রোসের মাটি নেই। উপজেলার যে সেতুগুলোর এপ্রোসে মাটি নেই সেই সেতুগুলোর তালিকা করে বরাদ্দ দিয়ে অচিরেই মাটি ভরাট করা হবে। খুড়াইখালী খালের ওপর সেতুটি লোকজনের যাতায়াতের জন্য জরুরি। অচিরেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।