ঢাকা: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে দেশব্যাপী চলছে কঠোর ‘লকডাউন’। সড়কে জরুরি সেবা ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে।
এদিকে সড়কে অহেতুক মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি মোড়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল ও চেকপোস্ট দেখা গেছে। এগুলোতে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদও চলছে৷
কঠোর ‘লকডাউনে’ বারতম দিনে সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও চেকপোস্ট থাকলেও অনেকটা ঢিলেঢালা ভার থাকতে দেখা গেছে।
সরকারের বিধি-নিষেধ অনুযায়ী মোটরসাইকেলে দু’জন একসঙ্গে চলাচলের অনুমতি না থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। এদিকে রিকশায়ও একসঙ্গে দু’জন/তিনজনকে চড়তে দেখা গেছে। প্রাইভেটকার নিয়ে সড়কে অনেকেই অহেতুক বের হচ্ছেন৷ মাঝে মধ্যে দু-একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশাও চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। অনেকে হেঁটে, রিকশায়, মোটরসাইকেলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে চলাচল করছেন।
যদিও দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দিনের পর দিন বাড়ছে, তবুও সাধারণ মানুষের মধ্যে এর তেমন কোনো প্রভার দেখা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইইডিসিআরের দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, গত ১০ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা একদিনে মৃত্যুতে সর্বোচ্চ রেকর্ড। মৃত ২৩০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩৩ জন এবং ৯৭ জন নারী। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬ হাজার ৪১৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৪ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জনে।
রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, সারি সারি রিকশা দাঁড়িয়ে আছে। পাশে পাঠাও মোটরসাইকেল চালকরাও দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রীর অপেক্ষায়। এদিকে আব্দুল্লাহপুর মোড়ে রয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট। কিন্তু এ এলাকায় মানুষের প্রচুর সমাগম দেখা গেছে। নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপে না চালালেও সড়কে পাঠাও মোটরসাইকেল চালকরা চুক্তিতে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে রিকশায় করে দুইজন/তিনজন যাচ্ছেন। অনেকে আবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ। তাদের মাস্ক থাকলেও তা থুতনিতে ঝুলে আছে।
পথচারী আবুল কাশেমের কাছে মাস্ক থুতনিতে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা আমগো ধরবো না। মাস্ক পড়ছি তো। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই একটু ফাঁকা করছি।
এদিকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাঠাও চালক আফজাল জানান, এখন কড়াকড়ি ‘লকডাউন’ নাই, কিছুটা ঠান্ডা, তাই তিনি যাত্রী সেবা দিতে বের হয়েছেন। এতে তার কিছু আয় হবে।
তিনি বলেন, পাঠাও অ্যাপস বন্ধ, তাই চুক্তিতে ভাড়া নিচ্ছি। চেকপোস্ট দেখলে আগেই যাত্রীকে নামিয়ে দেই, পার হয়ে আবার তুলে নেই। অনেক জায়গাতে পুলিশ আটকে দেয়। গত কয়েকদিন আগে মামলা দিয়েছিল। সেই স্লিপ দিয়ে চলছি।
সব মিলিয়ে মানুষের মধ্যে কঠোর ‘লকডাউন’ মানার প্রবণতা কমে গেছে। সেই সঙ্গে কমেছে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২১
এসজেএ/এসআই