ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শাহজাদপুরে চাঞ্চল্যকর আব্দুর রহমান হত্যার রহস্য উদঘাটন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২১
শাহজাদপুরে চাঞ্চল্যকর আব্দুর রহমান হত্যার রহস্য উদঘাটন

সিরাজগঞ্জ: ধানক্ষেত থেকে ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের এক সপ্তাহেই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে চাঞ্চল্যকর আব্দুর রহমান হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জমি-জমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও খালাতো ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীর সঙ্গে পরকিয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।

ইতোমধ্যে পরকিয়া প্রেমিকাসহ মামলার চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রেমিকা আয়শা খাতুন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।  

রোববার (৩০ মে) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (২৯ মে) বিকেলে শাহজাদপুর চৌকি আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানির কাছে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন আয়শা খাতুন।  

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আয়শার দেওয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, এক বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী হারান আয়শা খাতুন। তাদের বাড়িতে স্বামীর খালাতো ভাই আব্দুর রহমানের আগে থেকেই যাতায়াত ছিল। স্বামীর মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিষয়টি টের পেয়ে আয়শার দেবর নজরুল ইসলাম ক্ষুব্ধ হন। এরপর নজরুল আব্দুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে দেয়। এর সঙ্গে যুক্ত করে আয়শার ছোট ভাই আনিছ প্রামানিককে। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক বুধবার (১৯ মে) গভীর রাতে আব্দুর রহমানকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আসেন আয়শা। এরপর তারা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশের মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশ এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে পাশের গোপিনাথপুর গ্রামের ধান ক্ষেতে মরদেহ ফেলে দেয়।  

এসআই আব্দুল জলিল বলেন, চর বেলতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত শামছুল প্রামানিকের ছেলে আব্দুর রহমান (৩৮) গত ১৯ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের ৪ দিন পর রোববার (২৩ মে) ধানক্ষেত থেকে আব্দুর রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই শাহজাহান প্রামাণিক বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই মামলার আসামি নিহতের চাচাতো ভাই আবুল কালাম (৪৫), আব্দুস সালাম (৫০) ও মনিরুজ্জামানকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে শুক্রবার (২৮ মে) গভীর রাতে আয়শা খাতুনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। এরপর শনিবার (২৯ মে) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুর রহমানের বন্ধু নজরুল ইসলাম (৩৫) ও আয়শার ছোট ভাই আনিছ প্রামানিককে (২৫) আটক করা হয়।  

তিনি জানান, পরকিয়া প্রেম ও চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তবে এ হত্যকাণ্ডের সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।