ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২৭ জুন ২০২৫, ০১ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় সেমিনার

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:২৮, জুন ২৬, ২০২৫
কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ

‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ ২০২৫ উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী জাতীয় সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।  

তারা বলেছেন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় টেকসই সমাধান ও পরিবেশ রক্ষার মূল চাবিকাঠি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পরিবেশ অধিদপ্তরের কনফারেন্স কক্ষে ‘কঠিন বর্জ্যের টেকসই ব্যবস্থাপনা: চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক থিমেটিক সেশনে বক্তারা এ কথা বলেন।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহানের সুচনা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায়, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং অংশীদার সংস্থাগুলো—সুইস রেড ক্রস, বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল), ডব্লিউইইই সোসাইটি বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) যৌথভাবে এই সেশনটি আয়োজন করেছে।  

‘গোফর ইমপ্যাক্ট’ কর্মসূচির আওতায় আয়োজিত এ সেশনে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থা, নাগরিক সমাজ, যুব সমাজ, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা এ সেশনে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ বলেন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর অগ্রগতি আনতে তিনটি বিষয়ে জোর দিতে হবে—গণসচেতনতা, প্রাতিষ্ঠানিক অংশীদারত্ব ও আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন।

স্বাগত বক্তব্যে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, বর্জ্য সমস্যার সমাধান শুধু ডাস্টবিন স্থাপনে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করতে হলে সবার আগে আমাদের আচরণ বদলাতে হবে, অন্যকে উৎসাহ দিতে হবে, আর পুনর্ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে হবে।  

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সোহরাব আলি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরও শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্ব ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।  

সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার শিরিন সুলতানা লীরা বলেন, সহযোগিতা, সমন্বয় ও যৌথ উদ্যোগ—কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় টেকসই সমাধান ও পরিবেশ রক্ষার মূল চাবিকাঠি।

সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াটারএইড’র গোফরইমপ্যাক্ট টিম লিডার এবং সুইসকন্টাক্ট বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম সাঈফ মনজুর-আল-ইসলাম। সাঈফ তার উপস্থাপনায় দেশের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বর্তমান বাস্তবতা, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ, নীতিগত অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন।  

সেমিনারে আরও তিনটি উপস্থাপনায় প্লাস্টিক, জৈব এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন বিপিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদেম মাহমুদ ইউসুফ, সুইস রেডক্রসের টেকনিক্যাল ম্যানেজার কমলেন্দু দাস ও ডব্লিউইইই সোসাইটি বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারপার্সন ড. মো. মোস্তফা আকবর।  

অনুষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবস্থাপনা) রাজিনারা বেগম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. তারিক বিন ইউসুফ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব সাসটেইনেবিলিটি সুমাইয়া তাবাসসুম আহমেদ, টিআইবি যুব সম্পৃক্ততা ও সহায়তা (ইয়েস) গ্রুপের সাধারণ পরিষদ সদস্য আবরার জাহিন রেইন।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।  

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পরিচালক (প্রোগ্রামস অ্যান্ড পলিসি অ্যাডভোকেসি) পার্থ হেফাজ শেখ ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সেশনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।  

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।