মেহেরপুর: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘জাতির পিতার দেখানো পথেই বাংলাদেশ পরিচালনা করছে বর্তমান সরকার। কোভিড-১৯ সারা বিশ্বের অর্থনীতিকে একটি বিরাট ঝাঁকুনি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর প্রেরণা প্রি ক্যাডেট একাডেমি প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উপজেলার দুর্যোগ সহনীয় ঘর প্রাপ্তরা। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার করোনাযুদ্ধে সফল হয়েছে। সরকারের প্রতি দেশের মানুষের সহযোগিতা থাকার কারণেই সরকার এ যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। সম্পদশালী, উন্নত জীবন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পন্ন আমেরিকা-ইতালি ছাড়াও ভারত ও ব্রাজিলের মত দেশও আজ করোনায় বিপর্যস্ত। সেখানে বাংলাদেশের মত একটি দেশ করোনায় খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সরকার প্রথম থেকে করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করার কারণেই এদেশে মৃত্যুর হার কম। দেশে করোনা সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়েছে- করোনা কি জিনিস এবং করোনা ঝুঁকির মধ্যে কি করতে হবে। ’
‘শীত আসছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্ত বাড়ছে। তাই এখন থেকে আমাদের সচেতন হতে হবে। সেক্ষেত্রে মাস্ক পরা আব্যশিক হয়ে পড়েছে। দেশের ৬০ ভাগ তরুণ। তাই তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে করোনা মোকাবিলায়,’ যোগ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার কারণে আজ ঘরে বসে সব কাজ করতে পারছি। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে ক্লাস করছে। ডিজিটাল আইন পাস হলে আমরা আমেরিকায় বসে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব। ’
জেলা প্রশাসক ড. মো. মুনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন সরকার, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীন, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, দারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌফিকুল বারী বকুল, দারিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুস্তাকিম হোসেন খোকন প্রমুখ।
এসময় সুবিধাভোগীদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে লেখা একটি চিঠি পড়া হয়। চিঠি পাঠ করেন সুবিধাভোগীদের পক্ষ থেকে তুষার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা কাউকে কষ্টে রাখত চান না। যখন যেটা করা প্রয়োজন, সেটাই করেছেন তিনি। লকডাউনের কারণে এদেশের দিনমজুর, সংগীত শিল্পী, যাত্রা শিল্পী, সাংবাদিক, কুলি, শ্রমিক সব শ্রেণির মানুষের পাশে সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে স্বল্প মেয়াদে লকডউন রেখেছিলেন। এখন আবার অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়িয়েছে এদেশে। করোনকালে জিডিপি সামান্য কমলেও আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ এশিয়ার সর্বোচ্চ জিডিপির দেশ। বাংলাদেশে এখন অর্থনীতির শক্তিশালী ভিত তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশে যে ফরেন রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ছয় মাস চালানোর সক্ষমতা রয়েছে বর্তমান সরকারের। কিন্তু সরকার ফরেন রিজার্ভ এখনই ব্যবহার না করে আরো বাড়ানোর প্রচেষ্টায় রয়েছে। ’
কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকদের উন্নতমানের বীজ, স্বল্প মূল্যে সার, ডিজেল দিচ্ছে। এছাড়া কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, লেখাপড়া ও উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করতে কাজ করছে। দেশের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, খাল ও নদী খননসহ নানা ধরনের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। ’
দোকান, মাঠ, অফিস-আদালত যত ব্যস্ত থাকবে, অর্থনীতির চাকা ততটাই সচল থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ সুস্থ থাকলে দেশও ভালো থাকবে। ’
এ সময় মুজিবনগর প্রকল্পের এক হাজার কোটি টাকা, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণ, ২৩৩ কোটি টাকার ভৈরব নদ খনন, রেলপথ নির্মাণ, ১০০ কোটি টাকার সেচ প্রকল্পের কাজসহ নানা ধরনের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
এসআই