ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

টিভি-অনলাইন ক্লাস বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা পাবে ডিভাইস!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
টিভি-অনলাইন ক্লাস বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা পাবে ডিভাইস!

ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিকালীন বাসায় বসে সংসদ টিভি এবং অনলাইনে প্রচারিত ক্লাসে যেসব শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারছে না, তাদের ইলেকট্রনিক ডিভাইস দেওয়ার চিন্তা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শনিবার (২৭ জুন) শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত ‘করোনায় শিক্ষার চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে এ ভাবনার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিকে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী, যাদের কাছে আমরা কোনোভাবে পৌঁছাতে পারছি না, তাদের ব্যাপারে আমরা চিন্তা করেছি, কীভাবে কোনো একটা ডিজিটাল ডিভাইস তাদেরকে (দেয়া যায়), সেটিতে অনলাইনের প্রয়োজন নেই।

ওটার মধ্যে ইনপুট দিয়ে দিতে পারি কি-না, সে ব্যপারে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।

তিনি বলেন, ডিভাইস কেনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লোন দেওয়া যায় কি-না, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারনেটের খরচ দিচ্ছে। লোন দিচ্ছে। এই দুর্যোগে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরে মাধ্যমিক স্তরে ২৯ মার্চ থেকে টিভিতে ক্লাস সম্প্রচার শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

টেলিভশন বা অনলাইনের মাধ্যমে সবার কাছে ক্লাস পৌঁছানো যাচ্ছে না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। টেলিভিশন এবং মোবাইল ফোনে যাদের এক্সেস আছে তারাও পাচ্ছে। জরিপে এসেছে, প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসগুলোতে এক্সেস করতে পারছে। আমরা ১০ ভাগের কাছে পৌঁছাতে পারছি না। তাহলে এই ১০ ভাগকে পেছনে ফেলে রেখে এগিয়ে যাবার কথা ভাবতে পারি না। আমরা তাদের কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করব?

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে টোল ফ্রি লাইন-৩৩৩৬, যাদের কাছে কোনোভাবে পৌঁছাতে পারছি না, তাদের কাছে পৌঁছাবার চেষ্টা করছি। এই লাইনের কাজ হয়ে গেছে, শিগগিরই হয়তো চালুও হয়ে যাবে। তারা শিক্ষকদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে কথা বলে কোথায় সমস্যা আছে, কোথায় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে সেটি তারা করতে পারবে।

ক্লাসের জন্য কমিউনিটি রেডিও ব্যবহারের বিষয়েও কাজ চলছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, একইসঙ্গে আমাদের প্রতিটি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, প্রতিটি ইউনিয়নে তথ্যসেবা কেন্দ্র আছে। সেগুলোকে আমরা কাজে লাগাতে পারি।

শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছি, শিক্ষা ক্ষেত্রে যে প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার হবে, কী করে সেগুলো থেকে বিনামূল্যে না হলে অতি অল্পমূল্যে সেবা পেতে পারি তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমি ইন্টারনেটে বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি এবং আমার বিশ্বাস প্রত্যাহার হয়ে যাবে। কারণ, অনলাইন এডুকেশনে ইন্টারনেট প্রয়োজন।

অনলাইন শিক্ষার দিকে যাচ্ছি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনলাইন এডুকেশনের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় বাধা আমাদের ‘মাইন্ড সেট’। এই ‘মাইন্ড সেট’ বাধাকে দূর করতে হবে। সবাই এক রকম দক্ষ না হলেও চেষ্টা করলে সেই দক্ষতা অর্জন খুবই কষ্টসাধ্য বা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার নয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ৮৫-৯০ ভাগ শিক্ষার্থীর কাছে কোনো না কোনো ডিভাইস আছে। বাকি যারা আছে, তাদের কীভাবে ডিভাইস দেওয়া যায়, আশা করছি একটা ভালো ফলাফল হবে। ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট চার্জ যেন না নেওয়া হয়, সে জন্য কাজ চলছে। আমরা আইসিটি ব্যবহার করে শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে চাই। শুধু তা করোনাকালীন নয়। এটা পরবর্তীতে যাতে ব্যবহার করা যায়, সে ব্যবস্থাও।

মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো রমরমা বাণিজ্য করছে জানিয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, তারা কেন সিএসআর নিয়ে এগিয়ে আসছে না? ইন্টারনেটের খরচ বাড়িয়ে তা হবে না। ডিজিটাল কনটেন্ট ইউনিফর্ম যেন থাকে সেজন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করেই তৈরি করতে হবে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন বলেন, অনলাইন বা টিভি ক্লাস দেখতে পারছে কি-না, তা নিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তাদের ছাত্রদের দেখভাল করতে হবে।

স্কুলে ধারাবাহিক মূল্যায়ন বাড়বে
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষা থেকে যাতে বের হয়ে আসতে পারি, সেটি নিয়েও কাজ চলছে। এ বছর তিনটি বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নের পাইলট প্রকল্পে অসম্ভব সাড়া পেয়েছি। আগামী বছরে চালু করার চেষ্টা করছি। এরপর আরও কিছু বিষয় এবং সব বিষয়ের কিছু অংশ ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
এমআইএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।