ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩২, ০৩ মে ২০২৫, ০৫ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

জাতীয় টিকা দিবসের ১ম রাউন্ড শনিবার

স্টাফ করেসপন্ডেস্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৬, জানুয়ারি ৬, ২০১২
জাতীয় টিকা দিবসের ১ম রাউন্ড শনিবার

ঢাকা: শনিবার ২০তম জাতীয় টিকা দিবসের প্রথম রাউন্ড। এদিন ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ২ ফোঁটা পোলিও এবং একটি ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।



জাতীয় টিকা দিবসের ২য় রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি।

শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ২০তম জাতীয় টিকা দিবসের উদ্বোধন করবেন।

শুক্রবার মহাখালীর সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দিবসের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, প্রথম রাউন্ডে এবার ০ থেকে ৫৯ মাস বয়সী সব শিশুকে ২ ফোঁটা পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে।

৬ থেকে ১১ মাস বয়সী সব শিশুকে একটি নীল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি লাল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘পোলিও টিকার সঙ্গে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ালে শিশু মৃত্যুহারও কমবে। ’

তিনি আরো জানান, কোনো শিশুর টিকা খাওয়া যেন বাদ না পড়ে সে জন্য রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত চলবে ‘বাদ পড়া শিশু অনুসন্ধান’ কার্যক্রম।

ইপিআই’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তাজুল ইসলাম এ বারি জানান, ১ লাখ ৬০ হাজার কেন্দ্রের মাধ্যমে এবার শিশুদের টিকা খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ২০ হাজার রয়েছে ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র।

মাঠ পর্যায়ে সাত লাখ লোক এ দিবসকে সফল করার জন্য কাজ করবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রাউন্ডের দিন শূন্য থেকে ৫ বছরের শিশুকে ২ ফোঁটা পোলিও টিকা এবং ২ থেকে ৫ বছরের শিশুকে ১টি কৃমিনাশক ট্যাবলেট  খাওয়ানো হবে।

শিশুদের টিকাদান কেন্দ্রে আনার সময় ভরাপেটে নিয়ে আসার জন্যে অনুরোধ করেছেন মন্ত্রী।

ডা. আফম রুহুল হক বলেন, ইপিআই কার্যক্রমের পেছনে সরকার প্রতি বছর ৮০ কোটি টাকা ব্যয় করছে। গত দশ বছরের মধ্যে মাত্র এক বছরে দেশে পোলিও রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে গত ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত রয়েছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছর নির্ধারিত বয়সের শতভাগ শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যদি কোনো শিশু গত ৪ মাসের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে থাকে, তবে সেই শিশুকে ক্যাম্পেইনে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। যদি কোনো শিশু ১ মাসের মধ্যে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে থাকে, তবে সেই শিশুকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো যাবে না। কান্নারত অবস্থায় শিশুকে ভিটামিন  ‘এ’ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো যাবে না।

উভয় রাউন্ডে পাঁচ বছরের কম বয়সী কোনো শিশু পূর্বে জাতীয় টিকা দিবসে বা নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় বা অন্য কোনোভাবে পোলিও টিকা খেয়ে থাকলেও তাকে পোলিও টিকা খাওয়াতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, গ্রামাঞ্চলে প্রতি ওয়ার্ডে চারটি টিকাদানকারী দল কাজ করবে। প্রতিটি দলে কমপক্ষে ২ জন সদস্য থাকবেন। একজন পোলিও টিকা খাওয়াবেন এবং একজন টালি ফর্ম পূরণ করবেন। এভাবে চারদিনে সম্পূর্ণ ওয়ার্ডের কাজ সম্পন্ন হবে।

একটি দল মাঠকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী, আরেকটি দল শিক্ষক এবং স্বেচ্ছাসেবীর সমন্বয়ে গঠিত হবে। প্রতিটি দলে একটি করে ভ্যাকসিন ক্যারিয়ারের মধ্যে কমপক্ষে ২০ ডোজ পোলিও টিকা থাকবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. হুমায়ুন কবির এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. খন্দকার মো. শিফায়েত উল্লাহ।

এদিকে ২০তম জাতীয় টিকা দিবস-২০১২ উপলক্ষে  রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী আলাদা বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০তম জাতীয় টিকা দিবস-২০১২ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত রাখতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় টিকা দিবসের গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ। আমি জেনেছি, এ দিবসে ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় দু’কোটি বিশ লাখ শিশুকে দু’ফোঁটা করে পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে। দেশে পোলিও রোধে এ ধরনের পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। আমি দিবসটিকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসহ সকলের সহযোগিতা ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছি। ’

রাষ্ট্রপতি ‘২০তম জাতীয় টিকা দিবস-২০১২’ এর সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘দেশকে পোলিওমুক্ত রাখা ও পোলিও পুনঃসংক্রমণ রোধকল্পে ২০তম জাতীয় টিকা দিবসের ১ম রাউন্ড ৭ জানুয়ারি ২০১২ পালিত হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। ’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রায় ১১ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক পুনরায় চালু করেছে। শতভাগ শিশুকে টিকা প্রদান নিশ্চিত করা হয়েছে। শিশু মৃত্যুহার হ্রাসসহ স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের জন্য জাতিসংঘ আমাদেরকে এমডিজি-৪ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে। এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের গুণগত মানোন্নয়নের জন্য আমরা সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড-২০১১ পেয়েছি। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, এ কর্মসূচির সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে এবং শিশুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে আমরা একটি সুস্থ জাতি গঠনের পথে এগিয়ে যাবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।