ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হেলালের অনেক টাকা আছে ভেবে খুন করেন রূপম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
হেলালের অনেক টাকা আছে ভেবে খুন করেন রূপম সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।

ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণখানের মোল্লারটেকে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের (২৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে ভেবে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করেন পূর্ব-পরিচিত চার্লস রূপম সরকার।

রোববার (২১ জুন) দিনগত রাতে রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা চার্লস রূপম সরকারকে গ্রেফতার করে ডিবি। এ সময় তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো বটি, ছুরি, ডিস এন্টেনা তার ও নগদ সাত হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (২২ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।

আরও পড়ুন>>>দক্ষিণখানে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার, মূলহোতা রূপম রিমান্ডে

তিনি জানান, গত ১৫ জুন উত্তরার দক্ষিণখান এবং বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে হেলালের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ফিঙ্গার ইম্প্রেশনের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরে হত্যার রহস্য উদঘাটনে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তদন্তের একপর্যায়ে সিসিটিভির ফুটেজ, তথ্য-প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে ২০ জুন ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রূপমের স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে ডিবি। তাদের দেওয়া তথ্যমতে দক্ষিণখানের একটি ডাস্টবিন থেকে ভিকটিমের খণ্ডিত মস্তক উদ্ধার করা হয়। পরে লুট করা টাকার অংশ বিশেষ নিয়ে আত্মগোপনের যাওয়ার চেষ্টাকালে রূপমকে গ্রেফতার করা হয়।

রূপমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, পূর্ব-পরিচিত ভিকটিম হেলালের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে ভেবে টাকা আত্মসাৎ করার জন্যই তিনি এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল করে ভিকটিমকে ফটোস্ট্যাট মেশিন কিনতে যাওয়ার কথা বলে রূপম সরকারের বাসায় আসতে বলে।

বাসায় আসার পর চার্লস রূপম সরকার এবং তার স্ত্রী মনি সরকার ভিকটিম হেলালকে ঘুমের ওষুধ মেশানো চা-পান করতে দেয়। চা-পানের একপর্যায়ে ভিকটিম হেলাল ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ডিস লাইনের তার ভিকটিমের গলায় পেচিয়ে স্বামী ও স্ত্রী দুই দিক থেকে টেনে হেলালের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ভিকটিমকে হত্যার পর তার বিকাশ এবং নগদ একাউন্টে রক্ষিত ৪৩ হাজার হাজার টাকা উঠিয়ে নেয় রূপম। এরপর তার স্ত্রী মনি সরকারকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেয় শাশুড়ি রাশেদার কাছে। আর রূপম হেলালের মরদেহটি বাথরুমে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে রেখে দেন। পরদিন সকালে রূপম অটোরিকশায় করে মরদেহের অংশ বস্তায় ভরে উত্তরার বিভিন্ন জায়গায় ফেলে রেখে আসেন।

নিহত হেলাল একজন কোরআনের হাফেজ এবং নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় ফাজিলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি দক্ষিণখান এলাকায় ফ্লেক্সিলোড, মোবাইল কার্ড কেনা-বেচা করতেন। সম্প্রতি মোবাইল সিম, ফ্লেক্সিলোডের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খাতা কলম, স্টেশনারি এবং খেলনা সামগ্রীর ব্যবসা করে আসছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।