ঢাকা, বুধবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কলেজছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ, সেই ৪ পুলিশ সদস্য ক্লোজড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
কলেজছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ, সেই ৪ পুলিশ সদস্য ক্লোজড

যশোর: যশোরে কলেজছাত্র নির্যাতনের অভিযোগে সাজিয়ালি পুলিশ ক্যাম্পের সেই ৪ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। 

সোমবার (১৫ জুন) প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে ওই চার পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

তারা হলেন- সাজিয়ালি ক্যাম্প ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুন্সি আনিচুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সুমারেশ কুমার সাহা, এএসআই সাজদার রহমান ও কনস্টেবল ফারুক হোসেন।

যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রের অভিযোগ তদন্তে নির্যাতনের প্রমাণ মেলেনি। তবে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে কর্মস্থল ত্যাগ ও সাদা পোশাকে অভিযান পরিচলানা করায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী কলেজছাত্র ইমরানের অভিযোগ, গত ৩ জুন সন্ধ্যায় তিনি সলুয়া বাজার এলাকা থেকে এক সঙ্গীসহ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সাজিয়ালি ফাঁড়ির পুলিশ তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে। এ সময় ভয়ে ইমরান দৌঁড় দিলে পুলিশ সদস্যরা তাকে ধরে মারধর করে। পরে ইমরান জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে একটি ফার্মেসিতে নিজেকে দেখতে পান। এ সময় পুলিশ পকেটে গাঁজা দিয়ে তার বাবার কাছে ফোন করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ছয় হাজার টাকায় ছেড়ে দেয়। পরে বৃহস্পতিবার ভোরে ইমরানকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বেসরকারি কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়।  

চিকিৎসকরা জানান, তার দুটি কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ৮ জুন বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় হয়। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি শেখের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

সোমবার (১৫ জুন) তদন্ত কমিটি পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত কমিটি ইমরানকে নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পায়নি।

যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্তে কলেজছাত্র ইমরানকে নির্যাতনের সত্যতা মেলেনি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছে ইমরানকে নির্যাতন করলে কিডনি হ্যামারেজ কিংবা ডেমারেজ হওয়ার কথা। কিন্তু সেটি হয়নি। আগে থেকেই তার কিডনির সমস্যা ছিল। এছাড়া তার শরীরে কোথায়ও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ইমরান পুলিশের তল্লাশি দেখে দৌঁড়ে পালায়। এক কিলোমিটার দূরে তিনি পড়ে যান। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। তখন ওই  চিকিৎসক তার শরীরে উচ্চ মাত্রার ব্যাথানাশক ইনজেকশন দেন। তার প্রভাব পড়তে পারে কিডনিতে। ইমরান গাঁজা সেবনকারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। নির্যাতনের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার সত্যতা মেলেনি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রশাসনিক কারণে চার পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। এরমধ্যে ক্যাম্প ইনচার্জ আনিচুর রহমান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। বাকি তিন সদস্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে অভিযান পরিচালনা করেছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
ইউজি/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।