ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সেই চিরচেনা ইফতার বাজার এখন যেন স্মৃতি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
সেই চিরচেনা ইফতার বাজার এখন যেন স্মৃতি!

রাজশাহী: রমজান আসার আগেই টানানো হতো রং-বেরঙের সামিয়ানা। অভিজাত রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে ফুটপাথ। সর্বত্রই বসতো ইফতারের বাজার। বেলা ১২টার পর থেকেই জ্বলতো চুলা। নানা ধরনের মুখরোচক খাবারের সৌরভ বাতাসে মৌ মৌ করতো। দুপুর গড়াতেই বাহারি সব ইফতারের পসরায় সেজে বসত বাজার। বিকেল হলেই ঢল নামত মানুষের। মোটকথা দিন শেষে ধুম পড়ে যেত ইফতার সামগ্রী কেনাবেচার।

কিন্তু সেই চিরচেনা দৃশ্যপট এবার নেই। এখন যেন কেবলই ফেলে আসা রমজানের স্মৃতি! কোথাও কেউ নেই।

এক গভীর শূন্যতায় যেন চারিদিক খা খা করছে। ফাঁকা, সুনসান সড়কগুলো যেন নিষ্প্রাণ হয়ে আছে। খুব সম্ভবত এবারই প্রথম পবিত্র রমজান মাস শুরু হলো এমন এক সময়ে, যখন করোনায় সমগ্র বিশ্বের পাশাপাশি আক্রান্ত ঘনবসতির বাংলাদেশও।

বর্তমানে লকডাউন চলছে রাজশাহীতে। তাই সব জায়গাতেই প্রায় অচলাবস্থা। করোনার প্রাণঘাতী ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম উপায় সঙ্গনিরোধসহ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। সে অবস্থায় দৈনন্দিন জীবনে ধর্মীয় আচার-আচরণসহ বিধিবদ্ধ নিয়মে পরিবর্তন এসে গেছে।
সেই চিরচেনা দৃশ্যপটে এখন ইফতারের কিছুই নেই, ছবি: বাংলানিউজমসজিদে গিয়ে সংঘবদ্ধভাবে নামাজ না পড়ে ঘরে বসে পড়া; জানাজায় যথাসম্ভব কম যাওয়া ইত্যাদি। বিধি-নিষেধ এসেছে পবিত্র রমজানে তারাবিসহ ঈদের জামাতে নামাজ পড়া নিয়েও। তাই কালের পরম্পরায় চলে আসা ঐতিহ্যবাহী সব ইফতার আয়োজনেও করোনার আঁচ পড়েছে। গেলো বছরও যেসব স্থানে জমজমাট ইফতার বাজার ছিল; সেখানে এখন ভর করেছে পিন পতন নিরবতা। বাঙালির সেহরি, ইফতার ও তারাবি কেন্দ্রীক মাহে রমজানে এসেছে অচেনা এক ভিন্নতা।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের এ বছর বাড়িতেই করতে হচ্ছে ইফতার আয়োজন। জানিয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)। করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ ঠেকাতেই নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
এভাবেই তালা ঝুলছে খাবার হোটেলগুলোতে, ছবি: বাংলানিউজরাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজক বলেন, রমজানে হোটেল-রেস্তোরাঁ বা দোকানপাট খোলার বিষয়ে আগের নির্দেশনাই বহাল রাখা হয়েছে। এর আওতায় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কেবল কাঁচা বাজার, নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রাখা যাচ্ছে। আর বেলা ২টার পর কেবল ফার্মেসি ছাড়া অন্য কোনো দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত রমজান মাসেও এ নিয়মই বহাল থাকবে।

এ বছর ইফতার পার্টিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান রিংকু বাংলানিউজকে বলেন, করোনা সংকটের কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। রমজানের মূল ব্যবসা ইফতার ঘিরেই। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে সব হোটেল-রেস্তোরাঁ এখন বন্ধ। শ্রমিকরা বেকার হয়ে আছেন। তাদের অনেক কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে প্রতিদিন গড়ে তাদের অন্তত ২০ লাখ টাকার লোকসান হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
এসএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।