ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফতুল্লার গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
ফতুল্লার গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষ .

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীতে রপ্তানীমুখী নিট প্রতিষ্ঠান ‘নিটিভো’ এ শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মালিকপক্ষ দেড় মাসের ছুটি দিলেও বেতন-ভাতা না দেয়ায় ওই শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। 

শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুর হতে কারখানার ভেতরে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

জানা গেছে, শনিবার কারখানাটি খোলা রাখায় শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন।

দিনের এক পর্যায় মালিক পক্ষ কারখানাটি লে-অফ ঘোষণার নোটিশ টানিয়ে দেয়। কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। লে-অফের নোটিশ প্রদানের খবর শ্রমিকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ সময় তারা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সেই সঙ্গে বিকেএমইএ সভাপতি এ.কে.এম সেলিম ওসমান মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য মালিক পক্ষকে কারখানাটি লে-অফ বাতিল করে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং ৫ এপ্রিল যথা সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করার অনুরোধ করেন এবং মালিক পক্ষ বিষয়টি মেনে নিয়ে লে-অফ বাতিল করে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং যথা সময়ে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৮০০ শ্রমিক কারখানার ভেতরে অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বলে জানা গেছে।   

শ্রমিকরা বলছেন, ছুটি দিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এপ্রিল মাসের বেতন ও আসন্ন ঈদ বোনাস আমাদের দিতে হবে। এসব দেয়া হলে আমরা ছুটিতে যেতে রাজি আছি।

বিসিক সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিস জানান, শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শ্রমিকেরা এই ছুটি মানছে না। তারা এপ্রিল মাসের বেতনসহ আসন্ন ঈদের বোনাস চাইছে। এই অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গার্মেন্টসের মালিক আসাদ সাহেব আসলে সিদ্ধান্ত হবে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে সরকার সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার আহবান জানিয়েছে। এরপর আরএমজি সেক্টরের বৃহৎ দুটি সংগঠন বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ তাদের সকল সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার আহবান জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বিকেএমইএ এর সভাপতি সেলিম ওসমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। কেউ বা শ্রমিকদের বেতন অগ্রিম প্রদান করছেন, কেউ বা শ্রমিক ছাঁটাই করছেন, কেউ আবার লে-অফ ঘোষণা করছেন, কেউ কেউ শ্রমিকদের বেতনের কোনো সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন না। বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও অনেকে গ্রাহ্য করছেন না। আমি পুনরায় শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ রাখছি। কেউ ব্যক্তিগত ইচ্ছায় বিকেএমইএ এর সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া নিজস্ব সিদ্ধান্ত দিবেন না। বর্তমানে সারাবিশ্বের এই করুণ অবস্থায় সকলকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ধৈর্য্য ধারণ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। কেউ যেন সুযোগ সন্ধানী না হোন। সময় মতো মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংকের সহযোগীতা নিতে হবে। বেতন আমাদের সবাইকেই দিতে হবে। আমাদের শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। পরিস্থিতি সামলে উঠলে আমরা আবারো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অংশীদার হতে পারবো।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সকল নীট গার্মেন্টস বন্ধ রাখতে গত ২৭ মার্চ বিকেএমইএ এর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি শিপমেন্ট থাকায় বিকেএমইএর অনুমতিক্রমে শনিবার নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটিতে অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরীতে বেশ কয়েকটি নীট গার্মেন্টস চালু ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।