বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার কাঁচকোল বুরুজের পার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ফাহিমার ডান পায়ে লাগানো প্রায় ১০ ফিট লম্বা শিকলটি খুলে দেন। পরে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউ এম রায়হান।
শুধু তাই নয়, তিনি ফাহিমার পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারটিকে ব্যক্তিগতভাবে ও সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতি দেন।
বর্তমানে সংসারে ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা রাবেয়া বেগম ছাড়া কেউ নেই। একমাত্র ছোট বোন ফেরদৌসী বেগমের বিয়ে হয়েছে পাশের গ্রামে। বৃদ্ধা মা যিনি নিজেই বয়সের ভারে এখন ন্যূজ, ঠিক সেই সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ফাহিমার ভার নিতে হচ্ছে তাকে।
ফাহিমার পরিবার ও গ্রামবাসীরা জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ফাহিমা উপজেলার কাঁচকোল বুরুজের পার গ্রামের ঈমাম মৃত নুরুজ্জামানের মেয়ে তিনমাস ধরে শিকলবন্দি। একসময় মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন ফাহিমা। তিনি কাঁচকোল খামার ছকিনা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৯৬ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন।
আকষ্মিকভাবে বাবা নুরুজ্জামান প্যারালাইজড হয়ে পড়লে অভাব-অনটনের সংসারে নিজের পড়াশোনার খরচ এবং সংসার চালাতে চাকরির সন্ধানে চট্টগ্রামে পাড়ি জমান ফাহিমা। সংসারের টানাপড়েন আর অসুস্থ বাবার চিকিৎসার চিন্তায় সেখানে চাকরিরত অবস্থায় অত্যাধিক মানসিক চাপে কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি। এরপর বাবার মৃত্যুর শোক এবং অভাবের কারণে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউ এম রায়হান বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ফাহিমার বাড়িতে গিয়ে শিকল দিয়ে বাঁধা বন্দিদশা থেকে তাকে মুক্ত করেছি। তাকে দেখে এবং কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তোবা ভালো হতে পারেন। সেজন্য আমি পাবনায় একজন ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দুই-একদিনের মধ্যে আমাকে খবর দেবেন। ফাহিমার চিকিৎসার সব ধরনের খরচ আমি বহন করবো, পাশাপাশি পরিবারটির জন্য কিছু করার চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
এফইএস/এএটি