ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও মার্কেট নির্মাণ খাগড়াছড়ি পৌরসভার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও মার্কেট নির্মাণ খাগড়াছড়ি পৌরসভার

খাগড়াছড়ি: কোনো নির্দেশনা মানছে না খাগড়াছড়ি পৌরসভা। এমনকি পুনরায় হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

উচ্চ আদালতের স্থিতাদেশ থাকার পরও বিতর্কিত জায়গায় বিশ্ব ব্যাংকের টাকায় বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ) প্রকল্পের আওতায় চলছে মার্কেটের নির্মাণকাজ। ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একাধিকবার নানা কর্মসূচি পালন করেছেন।

এদিকে, নির্মাণ অব্যাহত থাকায় ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা। তবে পৌরসভার ক্রয় করা নির্মাণাধীন মার্কেটের জায়গার ওপর আদালতের কোনো স্থিতাদেশ নেই বলে দাবি করেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
 
এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনা অম্যান্য করে গায়ের জোরে মার্কেট নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখায় গত ২৮ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী রাপ্রুচাই চৌধুরী।

জানা যায়, খাগড়াছড়ির জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন পুকুরের একাংশের দাবিদার গোলাপ ফুল চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পুকুরের মালিকানা নিয়ে বাজার ফান্ডের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে ২০০৩ সালে গোলাপ ফুল চৌধুরীর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত স্থাপনা নিমার্ণের ওপর একটি স্থিতাবস্থা জারি করেন।

পরবর্তীতে পৌরসভার উদ্যোগেই শহরের জগন্নাথ পুকুরটি একেবারে ভরাট করে বিএমডিএফ ‘পৌর সুপার মার্কেট’ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। বর্তমানে রাত দিন মার্কেটটির নির্মাণকাজ চলছে।
 
এই নিয়ে পুকুরের একাংশের মালিক গোলাপ ফুল চৌধুরীর ছেলে রাপ্রুচাই চৌধুরীর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাইকোর্ট ২০০৩ সালে দেওয়া স্থিতাবস্থা পুনরায় জারি করেছেন। একই সঙ্গে পুকুরের ওপর মার্কেট নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম এবং মার্কেট নির্মাণে অর্থায়ন করা বিএমডিএফ প্রকল্পের ডিরেক্টরকে পক্ষভুক্ত করেছেন। আদালত তাদের ওপর রুল জারি করে তা মেনে চলারও নির্দেশ দিয়েছেন। তবে নির্দেশনা আসার পর কাজের গতি আরও বেড়েছে। এখন রাত-দিন চলছে মার্কেটের নির্মাণকাজ।

ভুক্তভোগী রাপ্রুচাই চৌধুরী বলেন, আগে দিনের বেলায় কাজ হলেও আদালতের নির্দেশনা আসার পর দ্রুত মার্কেট নির্মাণ করার তাগিয়ে ২৪ ঘণ্টায় কাজ চলছে। এতে হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। গত ২৮ জানুয়ারি আদালতের স্থিতাদেশ অমান্য করার অভিযোগ এনে তিনি সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলেও জানান তিনি।

তবে পৌরসভার কেনা জায়গার ওপর নির্মানাধীণ পৌর মাকেটের সঙ্গে স্থিতাদেশের কোনো মিল নেই বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দীলিপ কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমরা যেখানে মার্কেট নির্মাণ করছি, সেটি পৌরসভার কেনা জায়গা। এটির সঙ্গে আদালতের স্থিতাদেশের কোনো মিল নেই। জায়গা কেনার ক্ষেত্রে যে নিয়মগুলো আছে সেগুলো মেনে জায়গা কেনা হয়েছে। বাজার ফান্ডের অনুমোদন, নামজারিসহ সব কাজই আমরা করেছি। অন্যের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করার প্রশ্নই ওঠে না।

এদিকে খাগড়াছড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে তিনটি পুকুর থাকলেও তার দু’টিই দখল করে সেখানে উন্নয়নের নামে মার্কেট নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই গায়ের জোরে পুকুর দু’টিতে স্থাপনা গড়ে তুলছে খোদ পৌরসভা। এতে অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে খাগড়াছড়ি শহর।

** আদালতের নির্দেশও মানছে না খাগড়াছড়ি পৌরসভা

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২০
এডি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।