ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পঞ্চগড়ে পুলিশ সোর্স পরিচয়ে অর্থ-বাণিজ্য 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২০
পঞ্চগড়ে পুলিশ সোর্স পরিচয়ে অর্থ-বাণিজ্য 

পঞ্চগড়: মাটি খনন করে পাথর উত্তোলনের দাবিতে গত রোববার (২৬ জানুয়ারি) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পাথর শ্রমিকরা। এসময় পুলিশ ও পাথর শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন শ্রমিক নিহত এবং সাধারণ মানুষ, পাথর শ্রমিকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। 

সংঘর্ষে এ সময় জনতার মোটরসাইকেল, র‍্যাব ও পুলিশের একাধীক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আর এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ প্রায় ১৫০ জনকে এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাত ৫ হাজার জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে।

এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা অপরটি সরকারি কাজে বাধা প্রয়োগের অভিযোগে মামলা। এর পর থেকে ভজনপুর এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে মামলার আতঙ্ক।

আর এ সুযোগকে পুঁজি করে ড্রেজার মেশিন মালিক সফিকুল আলম কেরানী (৪২) নামে একজন নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে অর্থ-বাণিজ্য শুরু করেছেন। তিনি পুলিশের কাছের লোক/সোর্স পরিচয়ে মামলার এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতনামার লিস্ট থেকে নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাসে টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তিনি ভজনপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত ফইজুল ইসলামের (ফেকু) ছেলে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কেরানী নিজেই আতঙ্কিত সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে মামলার লিস্টে নাম রয়েছে বলে ভয় দেখাচ্ছেন এবং লিস্ট থেকে নাম বাদ দিতে পারবেন বলে টাকা আদায় করছেন।

আরও জানা গেছে, কেরানী এর আগেও ভজনপুর এলাকায় মাদক ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করেছেন। এমনকি তিনি দল পরিবর্তন করে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে বিভিন্ন অপকর্ম করছেন বলে জানা গেছে। এতে দলের ভাবমূর্তি খুণ্ন হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেরানী প্রকৃতপক্ষে কয়েকটি ড্রেজার মেশিনের মালিক। বর্তমানে তার ড্রেজার মেশিন বন্ধ থাকায় কোনো ব্যবসা বাণিজ্য নেই। তাই কৌশলে পুলিশের সঙ্গে মিশে নিজেকে সোর্স পরিচয়ে অর্থ-বাণিজ্য শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি জুয়া খেলা ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও তার চলা ফেরা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বাংলানিউজকে আরও জানান, সফিকুল আলম কেরানী নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে দাবি করে এবং মামলার লিস্টে থাকা নাম বাদ দিতে পারবে বলে টাকা চেয়েছে। তবে তার টাকা চাওয়ার পরিমাণ কারো কাছে এক লাখ, কারো কাছে দুই লাখ আবার কারো কাছে ৫০ হাজার টাকা।

পুলিশের সোর্স পরিচয়দানকারী কেরানীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।  

এ বিষয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার (এসপি) ইউসুফ আলী বাংলানিউজকে জানান, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি, এতে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।