ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিলুপ্তির পথে পৌষসংক্রান্তির ‘মেরামেরি’

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
বিলুপ্তির পথে পৌষসংক্রান্তির ‘মেরামেরি’ হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ-ঐতিহ্য পৌষ সংক্রান্তির মেরামেরি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের ধারক-বাহক অনেক কিছুই আজ বিলুপ্তপ্রায়। পৌষ সংক্রান্তির শীত উত্তাপের স্বাক্ষর ‘মেরামেরি’ হারিয়ে যেতে বসেছে। এটি আমাদের আবহমান বাংলার এক লোক সংস্কৃতি। তবে ঐতিহ্যের অনেক কিছুই কালের গর্ভে হারালেও এখনো টিকে আছে কিঞ্চিত পরিমাণে।

মেরামেরির অস্থায়ী এ ঘরটি তৈরি করা হয় পৌষ সংক্রান্তির রাতে। তারপর সেই খড়কুটো দিয়ে তৈরি মেরামেরির ঘরটির মাঝে ছোট-বড়রা মিলেমিশে গান-বাজনা আমোদপ্রমোদ করতে থাকে।

চলে সাধ্য অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া। পরের দিন সকালে ওঠে স্নান সেরে ঘরটাকে আগুনে জ্বালিয়ে দিয়ে এর চারপাশ ঘিরে পৌষসংক্রান্তির পিঠা খাওয়া মেরামেরির একটি রীতি।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে শ্রীমঙ্গল শহর সংলগ্ন বৈদ্যবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা গেলো, কুয়াশা ঢাকা সকালে শিশু-কিশোররা মেরামেরির ঘরটিতে আগুন জ্বালাতে ব্যস্ত। তাদের মনে-প্রাণ যেন নব আনন্দে শীতকে উপেক্ষা করে জেগে ওঠেছে। তবে রাতের তীব্র কুয়াশার কারণে সেই খড়কুটোর ঘরটি ভিজে একাকার। আগুন তাতে সহজে জ্বলে উঠছে না কিছুতেই। অর্ধশত শিশু-কিশোরসহ এলাকাবাসীর জোর তৎপরতা রয়েছে আগুন ধরানোকে কেন্দ্র করে। কিন্তু সবই যেন ব্যর্থ!পোড়ানো হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ-ঐতিহ্য পৌষ সংক্রান্তির মেরামেরি।  ছবি: বাংলানিউজকিছুক্ষণের ধোঁয়াটে আবহাওয়ার পর এবার খড়কুটোগুলো আপনা থেকেই উত্তাপ পেতে শুরু করে দিয়েছে। তারপর দাউদাউ আগুনের লেলিহান শিখা। খড়ের তৈরি গম্বুজ আকৃতির মেরামেরির ঘরটিকে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পুড়াতে শুরু করে দিয়েছে সর্বগ্রাসী আগুন।

চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ঝলক দত্ত জানান, পৌষমাস এলেই কিছুদিন আগ থেকেই আমাদের মেরামেরির ঘর বানানোর প্রস্তুতি চলে। খড়-বাঁশ বেত তৈরি করে রাখা হতো সেই দিনটির জন্য। সংক্রান্তির আগের দিন খড়-বাঁশ ও বেত দিয়ে বানানো (মেরামেরির) ঘর তৈরি করা হতো। রাতে ঘরে আমরা নিজেরা নিজেদের মতো রান্না-বান্না করে খাওয়া-দাওয়া করতাম।

তিনি আরও বলেন, কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের গ্রামীণ বাংলার এই লোক ঐতিহ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad