ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

ব্লেডের চাহিদা ১৬০ কোটি, কমানো হবে আমদানিনির্ভরতা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৪০, জুলাই ৩, ২০১৯
ব্লেডের চাহিদা ১৬০ কোটি, কমানো হবে আমদানিনির্ভরতা ব্লেডের রেজার হলে নিঁখুত শেভ করা যায় দ্রুত। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বেশি ব্লেডের রেজার দিয়ে নিঁখুত শেভ করা যায় অনায়াসেই। এ কারণে ক্লিন শেভিংয়ের জন্য দুই ব্লেড, তিন ব্লেডের রেজারের চাহিদা তুঙ্গে। দেশে প্রতি বছর ব্লেডের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৬০ কোটির, অথচ উৎপাদিত হচ্ছে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ কোটি। চাহিদা মেটাতে বাকি ব্লেড বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এবার, ব্লেডের এ আমদানিনির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড ‘ডাবল এজ রেজর ব্লেড’ উৎপাদন করছে, যা বাজারে ‘সোর্ড ব্লেড’ নামে পরিচিত। বাকি চাহিদা মেটাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ব্লেড আমদানি করা হয়।

দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে ব্লেড রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড। বিদ্যমান প্লান্ট আধুনিকায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে প্রতিষ্ঠানটি অধিক মানসম্পন্ন প্লাটিনাম কোটিং সুপার সোর্ড ব্লেড  উৎপাদন করবে। এতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশে ব্লেডের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিদেশ থেকে নানা কোম্পানির ব্লেড আমদানি করা হচ্ছে। এটা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘ডিসপোজাল রেজর ব্লেড স্থাপন ও বিদ্যমান মেশিনারিজ আধুনিকায়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। প্রকল্পের আওতায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক ব্লেড উৎপাদনের প্ল্যান্ট স্থাপন করবে সরকার। এ লক্ষ্যে টঙ্গী শিল্প এলাকায় শূন্য দশমিক ৭২ একর জমির উপর পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এ কার্যক্রম ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হবে।

সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটিকে ডিসপোজাল রেজর অ্যান্ড অ্যাসেম্বলিং নতুন প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেশের শিল্পায়নে অবদান রাখবে। এছাড়া, ৩৪ বছরের পুরনো মেশিনারিজ আধুনিকায়নের মাধ্যমে কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন ব্যয় ও অপচয় রোধ করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক করে তুলে বাজারে ব্লেডের মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা হবে।

বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেডের প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুমন রেজা বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে বছরে ব্লেডের চাহিদা প্রায় ১৬০ কোটি। অথচ দেশে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ কোটি ব্লেড উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে ব্লেড কিনতে প্রচুর দেশীয় মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। এজন্য আমরা দেশে উন্নতমানের ব্লেড তৈরি করবো। এতে, একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, পাশাপাশি ব্লেড কারখানায় প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

সূত্র জানায়, ১৯৭৬ সালে যুক্তরাজ্যের মেসার্স উইলকিনসন সোর্ড কোম্পানি থেকে টার্ন কি চুক্তির ভিত্তিতে একটি ব্লেড কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব পাওয়া যায়। ১৯৭৯ মেসার্স উইলকিনসন সোর্ডের সঙ্গে বিএসইসি (বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন) চুক্তি করে। চুক্তি মোতাবেক বিএসইসি ১৯৭৯ সালে একটি প্রকল্প প্রস্তাব শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। বিএসইসির প্রস্তাবনা ও পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন অনুযায়ী, শিল্প মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের অধীনে মিলগুলোর লভ্যাংশ, অর্জিত মুনাফা থেকে একটি ব্লেড ফ্যাক্টরি স্থাপনের জন্য ১৯৮০ সালে উদ্যোগ নেওয়া হয়। মেসার্স ইউলকিনসন সোর্ড ১৯৮০ সালের আগস্ট মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করে, ১৯৮৪ সালে সেপ্টেম্বরে তা সমাপ্ত হয়। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। বর্তমানে সেই পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে ব্লেড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
এমআইএস/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।