ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চলছে খাল খনন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চলছে খাল খনন

বাগেরহাট: আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বলইবুনিয়া (কালিকাবাড়ি) খাল খনন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার। 

জানা যায়, চলিত বছরের এপ্রিল মাসে বলইবুনিয়া (কালিকাবাড়ি) খাল পুনঃখনন শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার খুলনার আমিন অ্যান্ড কোং নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি এসএ রেকর্ডের বাইরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি খনন করে খাল কাটায় মোরেলগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন এলাকাবাসী।

ওই মামলার প্রেক্ষিতে গত ১১ জুন খাল কাটা বন্ধে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপরও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক খাল কাটা অব্যাহত রেখেছে ঠিকাদারেরা।

এ বিষয়ে বলইবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খম লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিশখালী নদীর শাখা খাল বলইবুনিয়া। খালটি শ্রেণীখালী মাঠ পর্যন্ত প্রবাহিত। এসএ রেকর্ড অনুযায়ী খালটি ১৮-২২ ফুট ছিল। বর্তমানেও তাই আছে। কিন্তু নতুন দরপত্র ও কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদারেরা স্কেভেটর (মাটি কাটা মেশিন) দিয়ে অনেক চওড়া করে খাল খনন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরফলে ব্যক্তি মালিকানা জায়গা, ফসলি জমি, বাগান ও ঘর-বাড়ি উপড়ে ফেলে খাল কাটা হচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে কাটার কারণে যে জায়গা থেকে খাল কাটা হচ্ছে তার বাইরে দুই পাশে প্রায় ২০ ফুট জায়গা নষ্ট হচ্ছে। এরফলে জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে খাল খনন করা প্রয়োজন। তবে বর্তমান দৃশ্যমান খাল ও এসএ ম্যাপের থেকে যদি বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দিয়ে খাল কাটার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন এ নেতা।

বলইবুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, এসএ ম্যাপের বাইরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা কেটে খাল খননের ফলে এলাকাবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। ঠিকাদারদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলা সত্ত্বেও জোরপূর্বক খাল কাটছিল। ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে আমরা আদালতের শরনাপন্ন হই। আদালত নিষেধাজ্ঞা দিলেও তারা খাল কেটে যাচ্ছে।

বলইবুনিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আজিজুল হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, নিজের মালিকানাধীন দুই কাঠা জমির উপর ঘর বেধে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকি। যেভাবে খাল কাটা হচ্ছে, সেভাবে চললে আমার ঘর ও জায়গা খালের মধ্যে চলে যাবে।

বারেক শিকদার বলেন, আমার জায়গায় থাকা বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ ও নারকেল গাছ উপড়ে ফেলেছে খাল কাটার জন্য। এছাড়া আমার জায়গা কেটে খালের মধ্যে নিয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত হেমায়েত শিকদার, আলম খান, ওসমান শিকদার, আনিস শিকদার, লতিফ শেখসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, ইচ্ছামতো খাল কাটার ফলে আমাদের অনেকের জমি খালের মধ্যে চলে গেছে। জমিতে থাকা গাছ, ঘর, ফল গাছসহ ফসল নষ্ট হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে এর ক্ষতিপূরণ চাই।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আমিন অ্যান্ড কোং এর স্থানীয় প্রতিনিধি বেল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ বন্ধ করেছি।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেয়ে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।