ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

নাসির আলী মামুনকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘ছায়াবন্দনা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৪
নাসির আলী মামুনকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘ছায়াবন্দনা’

ঢাকা: পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফিতে স্বকীয় এক শৈলীর নির্মাতা নাসির আলী মামুনের ফটোগ্রাফিক যাত্রা নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘ছায়াবন্দনা’। যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশি নির্মাতা মকবুল চৌধুরীর বানানো এই প্রমাণ্যচিত্রের পূর্ণ নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাসির আলী মামুন In praise of Shadows (ছায়াবন্দনা)’।

৬২ মিনিট দৈর্ঘ্যের প্রামাণ্যচিত্রটি আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুনের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি বিস্তারিত কাজের প্রতিচ্ছবি। এতে একজন নিরলস শিল্পীর শ্রম, সংগ্রাম ও ধ্যানের যাত্রা তুলে ধরা হয়েছে।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘ছায়াবন্দনা’ প্রামাণ্যচিত্রের প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রথিতযশা প্রাবন্ধিক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক বদরুদ্দীন উমর। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

অধ্যাপক বদরুদ্দীন উমর বলেন, নাসির আলী মামুনের ফটোগ্রাফিক যাত্রা অনন্য। তিনি দীর্ঘদিন অসংখ্য মানুষের পোট্রেট ছবি তুলেছেন। সেগুলোর আলাদা মূল্যায়ন অবশ্যই আছে। তবে এখন বলবো, বাংলাদেশের ছবিও এখন ক্যামেরায় তুলে আনা প্রয়োজন। দেশে আজ বিভিন্ন সেক্টরে তীব্র সংকট। সেগুলোও ছবিতে তুলে আনা এখন সময়ের দাবি।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নাসির আলী মামুন এবং তার ফটোগ্রাফি সবসময়ই আমার প্রিয়। আর তা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাণও করেছে একজন প্রিয় মানুষ। নাসির আলী মামুনের সাদা-কালো চিত্রগুলো আলো এবং ছায়ার মধ্যে সুন্দর, রহস্যময় এবং দ্ব্যর্থহীন সমন্বয় প্রদর্শন করে। বাংলাদেশের বহু বিখ্যাত ছবি তিনি ফ্রেমবন্দি করেছেন। তার অনুসন্ধানী ক্যামেরায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রেষ্ঠ মানুষের দুর্লভ মুহূর্তগুলো বন্দি হয়ে আছে। আলোকচিত্র শিল্পে তিনি নতুন এক ঘরানার সূচনা করেছেন।

৬২ মিনিট ব্যাপ্তির এই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির উন্নয়নে নাসির আলী মামুনের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ দশক নাসির আলী মামুন সৃজনশীল এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের বিভিন্ন দুর্লভ মুহূর্ত ক্যামেরায় বন্দি করে চলেছেন। তার শিল্পীত স্পর্শে আলোকচিত্রগুলো যেন মূর্ত হয়ে ওঠে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক ছবি তোলার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছেন। তার তোলা মাওলানা ভাসানী, কবি জসিম উদ্দীন, শিল্পী এস এম সুলতান, শিল্পী কামরুল হাসান, মাদার তেরেসা, লেস ওয়ালেসা, মিখাইল গরবাচেভ, ডেসমন্ড টুটু, বিল ক্লিনটনসহ অসংখ্য বিশ্ববরেণ্য মানুষের ছবি ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। প্রামাণ্যচিত্রে তার সেসব সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের নানা দিকের পরিস্ফুটন ঘটানো হয়েছে।

চলচ্চিত্রটি নির্মাণ প্রসঙ্গে নির্মাতা মকবুল চৌধুরী বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে এই ফিল্মটি নিয়ে কাজ করছি এবং অবশেষে ছবিটি দেখানোর সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। প্রামাণ্যচিত্রটি নাসির আলী মামুনের জীবন ও কাজের ওপর একটি বিশদ সৃষ্টি। তিনি এমন একজন ফটোগ্রাফার যিনি কিশোর বয়স থেকেই আমার আগ্রহ ধরে রেখেছিলেন। পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফিতে নিজের পরিচয়ের স্রষ্টা নাসির আলী মামুনের আলোকচিত্র যাত্রা একজন অক্লান্ত শিল্পীর শ্রম, সংগ্রাম ও ধ্যানের যাত্রা।

অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামসহ অন্যান্য নাট্যনির্দেশক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৪
এইচএমএস/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।