বুধবার (২৯ মে) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদের সময় যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে।
পুলিশ-বাস মালিকদের অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাস ছাড়ার আগেই ওই কমিটির সদস্যরা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করবেন। যেন কোনো ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামতে না পারে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমিয়ে এনেছি, এবার সবার সার্বিক প্রচেষ্টায় দুর্ঘটনাকে আমরা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চাই।
টার্মিনাল এলাকায় খাবার বিক্রি করে এমন হকারদের তালিকা করার প্রস্তাব দিয়ে কমিশনার বলেন, হকার বেশে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা আসবে, আর ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সবকিছু লুট করে নেবে তা হতে পারে না। বাস-মালিক সমিতি ও টার্মিনাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, আপনারা সুনির্দিষ্ট হকারের তালিকা করুন।
টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাগ ধরে টানাটানি নিষেধ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এটা এক ধরনের হয়রানি। যাত্রী কোন বাসে যাবেন সে সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেবেন। এ ধরনের হয়রানিসহ যেকোনো হয়রানিরোধে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) নির্ধারিত ভাড়ার বেশি আদায় করলে কিংবা কোনো চালক গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বললে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেন তিনি।
রমজান ও ঈদ উপলক্ষে নগরজুড়ে সমন্বিত-সুদৃঢ় নিরাপত্তা বলয়ের কথা উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, নানাবিধ কলা-কৌশলের মধ্যদিয়ে আমরা নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি। শপিংমলগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। রাজধানীজুড়ে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মোবাইল পেট্রোল ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে ২২ রমজানেও নগরীতে উল্লেখযোগ্য ছিনতাই, ডাকাতি, অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা নেই।
ঈদের ছুটিতে বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা নিজেদের প্রাথমিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে যাবেন। বাকিটা পুলিশ দেখবে বলেও জনান তিনি।
সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে হামলার বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। এর ২০-২২ দিন আগে গুলিস্তানে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালনো হয়েছিলো। দু’টি বিষয়ই আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট তদন্ত করছে। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরণের স্যাম্পল সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, অচিরেই কি উদ্দেশ্যে, কারা, কেন এবং কাদের টার্গেট করে এ হামলা করা হয়েছে বের হয়ে আসবে।
হামলায় উন্নতমানের ককটেল ব্যবহার করা হয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছিলো। উদ্দেশ্য পুলিশকে ভয় দেখিয়ে মনোবল ভেঙে দেওয়া, নাগরিকদের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করা। এর মধ্য দিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিশেষ ফায়দা নেওয়ার জন্য বসে আছে।
গুলিস্তান ও মালিবাগে দু’টি ঘটনাতেই যেহেতু পুলিশকে টার্গেট করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তবুও এর যোগসূত্র রয়েছে কি-না বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৯
পিএম/ওএইচ/