ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সেই তোফা-তহুরার ‘সুখের নীড়’ উদ্বোধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
সেই তোফা-তহুরার ‘সুখের নীড়’ উদ্বোধন ‘সুখের নীড়’র উদ্বোধনকালে তোফা-তহুরাকে কোলে নিয়ে মা শাহিদা বেগম। ছবি: বাংলানিউজ

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথক হওয়া যমজ দুই বোন তোফা-তহুরার জন্য নির্মিত ‘সুখের নীড়’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামে ‘সুখের নীড়’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন। পরে তোফা-তহুরাকে নিয়ে ‘সুখের নীড়ে’ প্রবেশ করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলেমান আলীর সভাপতিত্বে তোফা-তহুরার বাড়ির উঠানে এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক টিআইএম মকবুল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম ও দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল।

ইউএনও সোলেমান আলী বলেন, জন্মের পর থেকে তোফা-তহুরা তার নানাবাড়ি রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে বসবাস করছিল। তোফা-তহুরার বাবার বাড়িতে কোনো ঘর ছিল না। চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন, তোফা-তহুরাকে আলো-বাতাস থাকে এমন ঘরে রাখতে হবে। কিন্তু তাদের বাবার সাধ্য ছিল না এমন একটি ঘর নির্মাণ করার। তাই শিশু দু’টির মা-বাবা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তোফা-তহুরার জন্য ‘সুখের নীড়’ নির্মাণ করা হয়।

তোফা-তহুরার ‘সুখের নীড়’।  ছবি: বাংলানিউজ

তোফা-তহুরার মা শাহিদা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, তোফা সম্পূর্ণ সুস্থ, তবে তহুরা এখন কিছুটা অসুস্থ। সে স্বাভাবিক ভাবে প্রসাব করতে পারছে না। ক্যাথেটরের সাহায্যে তিন ঘণ্টা পর পর প্রসাব করাতে হয়।  

তিনি বলেন, ঘরের পাশাপাশি শৌচাগার ও নলকূপও বসিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

তোফা-তহুরার বাবা রাজু মিয়া ঘর উদ্বোধনের সময় সেখানে ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতদরিদ্র রাজু মিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। এদিন তিনি কর্মস্থলেই ছিলেন।

২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে নানাবাড়িতে তোফা ও তহুরার জন্ম হয়। মিডিয়ায় বিষয়টি আলোচিত হলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তাদের ওই বছরের ৭ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়। এরপর ১৬ অক্টোবর তোফা-তহুরার প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়।

২০১৭ সালের ১ আগস্ট তাদের আলাদা করার জন্য দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে সুস্থ হয়ে সে বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফেরে জমজ দু’বোন। পরে তহুরা আবারও অসুস্থ হলে ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর তাদের ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে সাড়ে চার মাস চিকিৎসা শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে ফেরে যমজ দু’বোন তোফা-তহুরা। সবশেষ চিকিৎসা শেষে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর বাড়িতে ফিরে আসে তোফা-তহুরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
এসএইচ/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।