ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব সংসদে নাকচ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব সংসদে নাকচ জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষ

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব জাতীয় সংসদে নাকচ করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন সংসদে জানিয়েছেন, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বর্তমানে যেটা রয়েছে সেটাই উপযুক্ত।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে সংসদের অধিবেশনে বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের বিধিতে সরকারি চাকরির বষয়সীমা বাড়িয়ে ৩৫ করার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু।

এই প্রস্তাব উপস্থাপনের পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ২২-২৩ বছরের মধ্যে স্নাতোত্তর ডিগ্রি লাভ করতে পারছে আমাদের তরুণরা। কাজেই তারা চাকরিতে প্রবেশে সাত বছর সময় পাচ্ছে। চাকরিতে প্রবেশে এ সাত বছরই যথেষ্ট। চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমার বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। যে নীতিগত সিদ্ধান্তটি এখন চলমান আছে তা হচ্ছে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে স্বাধীনতাত্তোর কালে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ছিলো মাত্র ২৫ বছর, পরবর্তীতে ২৭ বছর করা হয়। সর্বশেষ ৩০ বছর করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিসিএস পরীক্ষায় ৩০ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩২ বছর করা হয়েছে।
 
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তখন বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায়ই সেশনজট লেগে থাকত। সেই বিবেচনায় বয়স বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন সেশনজট নেই, যে কারণে শিক্ষার্থীরা যথা সময়ে  অর্থাৎ ২৩ বছরেই স্নাতোত্তর ডিগ্রি লাভ করছে। তাছাড়া ২৩ বছরে একজন শিক্ষার্থী যদি লেখাপড়া শেষ করে চাকরিতে প্রবেশ করেন আর ৩৫ বছরে একজন চাকরিতে প্রবেশ করেন তাহলে দু’জনের মধ্যে বয়সের পার্থক্য দেখা দেবে। তাতে বয়সের অসামঞ্জস্যতা দেখা দেবে। বয়সের অসামঞ্জস্যতার কারণে একই পদে চাকরি করার ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হতে পারে। তাই প্রস্তাবটা ততটা যৌক্তিক মনে হয় না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর রয়েছে। সরকারি চাকরিতে পেনশনের ক্ষেত্রে একটা নীতিমালা রয়েছে। পেনশন পেতে হলে অন্তত ২৫ বছর চাকরি করতে হয়। সেক্ষেত্রে যদি ৩৫ করা হয় তাহলে চাকরিতে প্রবেশ করতে ৩৫ বা ৩৭ বছর লেগে যাবে। এবং ৫৯ বছর থেকে ৩৭ বছর বাদ দিলে মাত্র ২২ বছর হয়। সেক্ষেত্রে পেনশন পেতে ঝামেলা হবে। কাজেই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে প্রবশের বয়সসীমা শৃঙ্খলায় রাখার জন্য বর্তমান নীতিই উপযুক্ত মনে করছে সরকার।  

সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবুল সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে সেই প্রস্তাবকে সমর্থন করে সরকারি বিরোধীদলের মোট ১০ জন সদস্য।  

প্রস্তাবের পক্ষে রেজাউল করিম বাবুল বলেন, বিশ্বের ১৯৯টি দেশের ১৫৫টি দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫-৫৯ পর্যন্ত রয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরান এরকম ১৫৫টি উন্নয়নশীল দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত করা আছে।

পরে প্রস্তাবটি সংসদে উপস্থিত সদস্যদের কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

** সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত  

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৯ 
এসকে/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।