ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বিজিএমইএ ভবন ভাঙবে কোন প্রতিষ্ঠান, সিদ্ধান্ত ২৫ এপ্রিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
বিজিএমইএ ভবন ভাঙবে কোন প্রতিষ্ঠান, সিদ্ধান্ত ২৫ এপ্রিল নিজ দফতরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলের মাঝে ‘বিষফোঁড়া’ বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেছেন, বিজিএমইএ ভবন ভাঙার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আর এ ভবন কোন প্রতিষ্ঠান ভাঙবে তা ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান না পাওয়া গেলে আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পক্ষ থেকে এ ভবন ভাঙা হবে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ দফতরে বিজিএমই ভবন ভাঙার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান মন্ত্রী।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিল, চমৎকার একটি স্থাপনা ঢাকার উপকণ্ঠে অনেক ব্যয়ে অনেক পরিকল্পনার ভেতর থেকে সুন্দর একটি ঝিল করা হয়েছে। কিন্তু ঝিলের মাঝখানে একটা বিষফোঁড়ার মতো বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের সময়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি। ফলে অনাকাঙ্খিতভাবে এ ভবনটি সেখানে বেড়ে উঠেছে। এর ব্যর্থতা-দায় আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেকেরই রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবৈধভাবে নির্মিত বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে আমরা সেটি ভেঙে ফেলার কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ভবনটিকে আমাদের দখলে নিয়েছি, ভবনের অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছি, সেবামূলক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।

তিনি বলেন, ভবনটি ভাঙার বিষয়ে একটি পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় বা পরে কোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি না হতে হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি প্রয়োজন আছে। অতীতে র‌্যাংস প্লাজা ভাঙতে গিয়ে অনাকাঙ্খিতভাবে বেশ প্রাণহানি হয়েছে।

‘এবারে আমাদের প্রস্তুতি বিজ্ঞান সম্মত, প্রযুক্তি সম্মত যাতে এ ভবনটি ভাঙতে গিয়ে কোনো প্রাণহানি ক্ষতির মুখোমুখি না হতে হয় সে প্রস্তুতি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ’

মন্ত্রী জানান, বুধবার সব জাতীয় দৈনিকে আমরা বিজ্ঞাপন দিয়ে এ জাতীয় ইমারত ভাঙায় যারা অভিজ্ঞ তাদের আগামী ২৪ তারিখের মধ্যে কোটেশন দাখিলের জন্য অনুরোধ করেছি। আইনগত পদ্ধতি অনুসরণের স্বার্থেই বিভিন্ন আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কাছে টেন্ডার আহ্বান করেছি। ২৪ এপ্রিলের ভেতর টেন্ডার পেয়ে আমরা ২৫ এপ্রিলের মধ্যে ভবন ভাঙার সিদ্ধান্ত নেব।

আর যদি উপযুক্ত সংস্থা না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার করে আমরা রাজউকের পক্ষ থেকে এ ভবন ভাঙার জন্য যে প্রক্রিয়া দরকার সেই প্রক্রিয়ায় যাবো। যেহেতু এ জাতীয় ইমারত ভাঙতে হলে অন্যান্য আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেওয়ার একটা বিধান আছে। সেই সুযোগটাকে আমরা কাজে লাগাবো। উপযুক্ত আহ্বানকারী না পাওয়া গেলে আমরা নিজেরাই ভাঙবো। ভাঙার ক্ষেত্রে দায়-দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে। কারণ আমরা চাই না রাষ্ট্রের চমৎকার একটি স্থাপনার মাঝখানে বেআইনি একটি ভবন টিকে থাকুক।

আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যারা বেআইনি ইমারত বা স্থাপনা নির্মাণ করবেন তাদের সবাইকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে চাই, যাতে কেউ দর্প করে বলতে না পারে আমি ইমারত নির্মাণ করে ফেলেছি এখন আর কিছু করার নেই। ’

কবে নাগাদ ভাঙার প্রক্রিয়া- আমরা আশা করছি, ২৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে দেব এবং সুপ্রিম কোর্টের একটা নির্দেশনা আছে, সেই নির্দেশনার আওতায় কোনোভাবেই টোটাল ভবন ভেঙে এবং সেখানে যা স্তুপ তা সরিয়ে ফেলা তিন মাসের ঊর্ধ্বে হবে না। জায়গাটা পরিষ্কার হয়ে যাবে তিন মাসের মধ্যে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটা বড় পরিকল্পনা নিয়েছি, ২৪টি টিম কাজ করছে ঢাকার বহুতল ভবন পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। দু’টি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি হয়েছে। সব মিলে আমরা একটি প্যাকেজ প্রোগ্রাম করবো। অতীতে অ্যাডহক ভিত্তিতে হয়েছে, যে একটি ভবন ভাঙার ভেতর শেষ, এবার তা না। আমরা যেগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন মনে করবো, যেগুলো অন-অথরাইজড মনে করবো, সেগুলোকে নিয়মিত পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করবো, যাতে আজ একটু করলাম, কাল একটু করলাম বা পথে থেমে গেলাম- এরকম না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯ আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা
এমআইএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।