ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মাসেতুর ৪-৫ নং পিলারে অস্থায়ী স্প্যান স্থাপন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৮
পদ্মাসেতুর ৪-৫ নং পিলারে অস্থায়ী স্প্যান স্থাপন পদ্মাসেতুর ৪-৫ নং পিলারে অস্থায়ীভাবে স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। ছবি-বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: দ্রুত এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতুর কাজ। মাওয়া প্রান্তের ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) ‘ওয়ান এফ’ আপাতত সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর রাখা হয়েছে। 

পাশের ৬ ও ৭ নম্বর পিলার প্রস্তুত হলে স্প্যানটি সেখানে স্থানান্তর করা হবে।

শুক্রবার(১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ পিলারের ওপর রাখা হয় স্প্যানটি।

এর আগে বুধবার সকালে মাওয়া কন্সস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৩৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান ই’ এর মাধ্যমে স্প্যানটি নিয়ে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওনা হয়। ধূসর রঙয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের  স্প্যানটির ওজন তিন হাজার ১৪০ টন।

পদ্মাসেতুর প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ নম্বর পিলারের পাইলিং কাজের উদ্বোধন করে সেতুর কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু ৩টি করে পাইল স্থাপনের পর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের। দেখা যায়, মাটির তলদেশে নরম মাটি থাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়। নতুন নকশার জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রকৌশলীদের। এক নম্বর মডিউলের অন্তর্ভূক্ত ৬ ও ৭ পিলারের কাজ এখনও সম্পন্ন করা যায়নি। ফলে প্রথম দিকে আসা এ দু’টি পিলারের স্প্যানটি মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে তৈরি করে রাখা ছিল দীর্ঘদিন। এজন্য সেখানে অন্য স্প্যান রাখার জায়গা হচ্ছিল না। ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। এজন্য অন্য স্প্যান রাখার জায়গা সংকুলান করতে পাশের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি রাখা হচ্ছে। পরে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের কাজ সম্পন্ন হলে এটি সরিয়ে নেওয়া হবে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, মাওয়া প্রান্তে অস্থায়ীভাবে স্প্যানটি বসানো হলেও এর প্রক্রিয়াটি স্থায়ী স্প্যান বসানোর মতো। প্রথমে স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের সামনে পজিশন অনুযায়ী আনা হয়। এরপর লিফটিং ক্রেনের সাহায্যে পিলারের ওপর রাখা হয় স্প্যানটি। দীর্ঘদিন ধরেই স্প্যানটি রাখা হবে এ পিলারের ওপর। তাই শক্ত করেই রাখা হয়েছে। এর আগে নির্মাণ কাজের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।  

তিনি আরো জানান, ১৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে এ পিলারের ওপর স্প্যানটি রাখা হয়। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। ফিটিং করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। মাওয়ায় এখন পর্যন্ত আনা ১৭টি স্প্যানের মধ্যে ৫টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে।  মাওয়া প্রান্তের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে বেশকিছু স্প্যান তৈরি হয়ে আছে। কাজের সুবিধার্থে এসব স্থনান্তর করা প্রয়োজন। অনেক পিলারের কাজ চলছে, কিন্তু সেটির স্প্যান প্রস্তুত আছে। নতুন কোনো স্প্যান রাখার জায়গা নেই। ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর রাখা  স্প্যানটি ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের কাজ শেষ হলে তার ওপর স্থাপন করা হবে।  

প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুর কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ ও মূল সেতুর অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। নদীর মধ্যে যে ২৬২টি পাইল বসবে তার ১৮০টির কাজ শেষ হয়েছে। মূল সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ১২টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া জাজিরা প্রান্তে রেলওয়ে বক্স স্ল্যাব বসতে শুরু করেছে।  

উল্লেখ্য, সেতুর ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পাঁচটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে জাজিরা প্রান্তে পৌনে এক কিলোমিটার কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যানটি। এর প্রায় ৪ মাস পর চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর মাত্র দেড় মাস পর ১১ মার্চ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ধূসর রঙের তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। আর পঞ্চম স্প্যানটি বসে এক মাস ১৬ দিনের মাথায়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।