শনিবার (২৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের ক্লিক মোড়ের সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রাত ১১ টা পর্যন্ত নিতদের মধ্যে ১৩ জনের নাম জানা গেছে।
আহতদের অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই শিশুসহ সাতজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সুরাইয়া (১১ মাস) নামে এক শিশু মারা গেছে বলে রামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম শফিক বাংলানিউজকে জানান। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- লাইলী (৪৫), বৃষ্টি (১০), ডলি (১৮), কুলসুম (৮), রফিক (৩৫)। এছাড়া আনুমানিক ৪০ বছরের এক ব্যক্তি ও ৫ বছরের এক শিশুর নাম জানা যায়নি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, বিকেলে পাবনা থেকে যাত্রী নিয়ে চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাস বগুড়ার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে লালপুর সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি লেগুনাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ১৫ জন নিহত হয়। নিহতরা সবাই লেগুনার যাত্রী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। লেগুনাটি পাবনা থেকে বনপাড়ার দিকে যাচ্ছিল।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিএম শামছুন নূর ঘটনাস্থল থেকে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, দুর্ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১০ জন নিহত হওয়ার খবর শুনেছি, এটা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেছে।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে গেছে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে নাটোরে নিয়ন্ত্রণহীন বাসের ধাক্কায় লেগুনার ১৫ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় তিন সদস্য করে পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এরমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে একটি কমিটি এবং অপরটি বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে। এই দুই কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন ও বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসনের কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। অপর সদস্যরা হলেন-, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুনুর রশিদ, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) মো. রাজ্জাকুল ইসলাম ও হারুনুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলেন তিনি।
এতে সহকারী পুলিশ সুপার মো.শহিদুল্লাহকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন করে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা, আহতদের ১০ হাজার টাকা এবং বিনা খরচে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৮/আপডেটেড ২৩১৭ ঘণ্টা
আরআইএস/এসএইচ/এসআইএস