ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিকেলে গাঁজা, সন্ধ্যায় মদের আসর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৮
বিকেলে গাঁজা, সন্ধ্যায় মদের আসর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছের নিচে ও কংক্রিটের বেঞ্চে বসে মাদক সেবন করছে কয়েকজন, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। স্বাধীনতা সংগ্রামসহ জাতীয় জীবনের নানা ইতিহাস ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে এ এলাকাকে ঘিরে। শরীরচর্চা ও অবসর সময় কাটানোর সুন্দরতম স্থান এটি। কিন্তু বিকেল নামতেই মনোরম এ উদ্যানে প্রকাশ্যে চলে মাদকের কারবার। বিকেলে গাঁজা সেবন ও সন্ধ্যার পরে বেশ কয়েকটি স্পটে চলে মাদকের বেচা-কেনা। সম্প্রতি সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৌশল পাল্টিয়েছে এর সঙ্গে জড়িতরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাঁজা বিক্রির জন্য ব্যবহার হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মাজারের উল্টোপাশের স্থান। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সীমানা ঘেঁষা কংক্রিটের একটি বেঞ্চে খাবার বিক্রি করেন এক মহিলা।

তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ওখানে বসে গাঁজা বিক্রি করেন তিন যুবক। বিকেল হতেই সীমানার ভেতর থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষের গাঁজা কেনার জন্য সিরিয়াল দিতে থাকেন। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ তিন যুবক গাঁজা সরবরাহ করেন।

এভাবে গাঁজা বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা এসব করে চলি। গাঁজার ‘স্টিক’ বিশ টাকা করে বিক্রি করছে বলে জানায় তারা। অন্যদিকে অনেকে খোলাও কিনছেন।  

এছাড়া ছবির হাটের গেইট থেকে টিএসসি রাজু ভাস্কর্যের উল্টো পাশের গেইট পর্যন্ত প্রকাশ্যে চলে গাঁজা সেবন। এসব গাঁজাসেবীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার লোকজন রয়েছেন। অনেকে ঝোপের আড়ালে বসে গাঁজা খাওয়ার জন্য প্রস্তুত করছেন। এসব এলাকার রাস্তা দিয়ে জনসাধারণের জন্য হাঁটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

গাঁজার উৎকট গন্ধের কথা উল্লেখ করে পথচারী নাজমুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, উদ্যানে একটু শান্তিতে বসার সুযোগটুকুও নেই। সবখানে গাঁজার গন্ধ। প্রশাসনকে এ বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে।

অন্যদিকে সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ পথ বন্ধ থাকলেও সীমনা টপকিয়ে বেশ কয়েকটি স্পটে চলে মাদক সেবন। সরেজমিনে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চারুকলার বিপরীতে ছবির হাট, মুক্তমঞ্চ, কালি মন্দির, তিন নেতার মাজার এর গলিতে চলে মাদক সেবন।

অন্যদিকে দোয়েল চত্বরের দোকানগুলোর পেছনে চলে ইয়াবা সেবন। নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানি বলেন, এখানে নিয়মিতই চলে মাদক সেবন। অভিযান চলার কারণে একটু কমেছে। এসবের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানা পুলিশ মধ্যে মধ্যে অভিযান চালায়। অনেককে আটকও করা হয়। তবুও থেমে নেই উদ্যানে মাদক সেবন।  

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, আমাদের টইল টিম রয়েছে যারা উদ্যান কেন্দ্রিক এসব বন্ধ করতে তৎপর রয়েছেন। প্রায়ই অনেককে আটক করা হয়। আমরা যখন তথ্য পাই তখন অভিযান চালাই। মাদক নিয়ে কোনো তথ্য থাকলে সবাইকে শাহবাগ থানায় জাননোর কথাও বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৮
এসকেবি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।