দীর্ঘদিন ধরে এসব সড়কের বেহাল দশা থাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এতে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, আসন্ন ঈদের ছুটিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে মানুষ বিধ্বস্ত জেলা সড়কে এলেই দুর্ভোগে পড়বেন। ওইসময় আবার বৃষ্টিও থাকবে। সেই দিক বিবেচনা করে ঈদের আগে সড়কগুলোর সংস্কার প্রয়োজন।
সড়ক বিভাগের খুলনার আওতাধীন সড়কগুলোর তালিকা থেকে জানা যায়, জাতীয় মহাসড়ক: দৌলতদিয়া-ফরিদপুর (গোয়ালচামট)-মাগুরা-ঝিনাইদাহ-যশোর-খুলনা-মোংলা (দিগরাজ) সড়ক, খুলনা শহর বাইপাস সড়ক (রূপসা সেতু অ্যাপ্রোচ সড়কসহ), খুলনা শহর (পুরাতন অংশ)-ফেরিঘাট-ডাকবাংলা মোড় সড়ক। এই তিন সড়কের দৈর্ঘ্য ৬১.০০১ কিলোমিটার।
আঞ্চলিক মহাসড়ক: খুলনা-চুকনগর -সাতক্ষীরা সড়ক, রূপসা-ফকিরহাট-বাগেরহাট সড়ক। এই দু’টি সড়কের দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক প্রায় পুরোটাই চলাচলের উপযোগী।
তবে জেলা সড়ক ১২টি- দাকোপ-বড়বাড়ীয়া-মধুখালী-তালা সড়ক, ফুলতলা-শাহাপুর-মিক্সিমিল-ডুমুরিয়া সড়ক, সাতক্ষীরা-আশাশুনি-গোয়ালডাংগা-পাইকগাছা সড়ক, বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক, কয়রা-নোয়াবাকি-শ্যামনগর সড়ক, কেশবপুর-বেতগ্রাম সড়ক, ফুলতলা-রেলগেট-দিঘলিয়া (নগরঘাটা)-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়ক, খুলনা (রূপসা)-শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক, শ্রীফলতলা-সেনেরবাজার সড়ক, তেরখাদা-মোল্লাহাট সড়ক, তেরখাদা-বর্ণাল-কালিয়া সড়ক, গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক। ১২টি জেলা সড়কের দের্ঘ্য ২৬৮.৩৫৮ কিলোমিটার।
এর মধ্যে দাকোপ-বড়বাড়ীয়া-মধুখালী-তালা ২৪ কিলোমিটার সড়ক, সাতক্ষীরা-আশাশুনি-গোয়ালডাংগা-পাইকগাছা ১১.৫০০ কিলোমিটার সড়ক, কয়রা-নোয়াবাকি-শ্যামনগর ৯ কিলোমিটার সড়ক, কেশবপুর-বেতগ্রাম ৫ কিলোমিটার সড়ক, তেরখাদা-বর্ণাল-কালিয়া ৫.৩৫৯ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের প্রায় অনুপোযোগী।
এ চার সড়কের রয়েছে বড় বড় খানা-খন্দ। এসব খানা-খন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলা তো দূরের কথা অনেক স্থানে পথচারীদের হেঁটে চলাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের বেহাল অবস্থা নিরসনের জন্য অগ্রগতি একেবারেই নেই বলে দাবি যাত্রী ও চালকদের।
তেরখাদা-বর্ণাল-কালিয়া সড়কের যাত্রী শামীম বলেন, সড়কের নাজুক অবস্থা। ঝুঁকি নিয়ে কোনোমতে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল করে। তবে প্রায়ই রাস্তায় যানবাহন বিকল হয়ে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
সাতক্ষীরা-আশাশুনি-গোয়ালডাংগা-পাইকগাছা সড়কের বাস চালক আব্দুল্লাহ বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণেই এ সড়কে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় বড় খাদগুলোতে আটকে পড়ার কারণে অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে যায়। ধীরগতিতে চলার কারণে সময় নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা ঝাঁকুনির ভয়ে বাস থেকে নেমে যেতে চান।
যাত্রী ও চালকদের অভিযোগ প্রতিবছর ঈদের আগে খানা-খন্দ যে অংশগুলো প্রচুর অর্থ ব্যয় করে সংস্কার করা হয়, সেগুলোই পরবর্তীতে আবার বৃষ্টির পানিতে খানা-খন্দে পরিণত হয়।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, খুলনায় সড়ক সংস্কারে অবহেলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাগুলো বেহাল অবস্থায় রয়েছে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে। আসন্ন ঈদে এ দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
জনদুর্ভোগ কমাতে ঈদের আগে সড়ক সংস্কারে দাবি জানান নিসচার এ নেতা।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) সড়ক বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ বাংলানিউজকে বলেন, চার জেলা সড়কের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। একনেকে অচিরেই অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
ঈদের আগে সড়কগুলোর সংস্কার হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেহাল সড়ক দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হলেও নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে ঈদের আগেই চলাচলের উপযোগী করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
এমআরএম/এএ
আরও পড়ুন...
** চলাচলের অযোগ্য সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক
**বাগেরহাটে পিচঢালা রাস্তায় ইটের সলিং