সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণ তদারকি সংস্থার খাম-খেয়ালিপনার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর ২০১৭ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনি এখনো।
এছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জোর করে প্রতিবার ঘাট পার হওয়ার জন্য টাকা নিচ্ছেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী পথচারীদের দিনে মাত্র একবারই টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইজারাদার ইচ্ছামতো ঘাট পারাপারে টাকা আদায় করছেন। এতে করে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ সাধারণ মানুষজনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্র অনুযায়ী, প্রতিবছর বৈশাখে মহিপুরঘাট এক বছর মেয়াদে ইজারা হয়। কিন্তু এবার বৈশাখ মাস এসে গেলেও নতুন করে ইজারা দেওয়ার কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির নেতাদের ম্যানেজ করে ইজারাদার অবৈধ টোল আদায় করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
লালমনিরহাট এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় তিস্তা সেতুটির মূল অংশের ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই এটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেতুটি চালু হলে লালমনিরহাট সদরসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধার সঙ্গে গংগাচড়াসহ বিভাগীয় শহর রংপুরের দূরত্ব ৩০-৫০ কিলোমিটার কমে আসবে। সহজতর হবে পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পণ্য পরিবহনও। একই সঙ্গে এসব এলাকার মানুষের যাতায়াত-সংক্রান্ত ভোগান্তিও বহুলাংশে কমে যাবে।
ভৌগোলিক কারণে লালমনিরহাটের উল্লিখিত উপজেলাগুলোর অবস্থান রংপুর বিভাগীয় শহরের খুব কাছে। কিন্তু এখানে তিস্তা নদীতে সেতু না থাকায় এসব অঞ্চলের মানুষকে রংপুর যেতে অসহ দুর্ভোগ সয়ে দীর্ঘপথ পারি দিতে হচ্ছে।
কাকিনা ইশোরকুল গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, সেতু শেষ হয়েছে কতো দিন হয়ে গেল। কিন্তু চালু না হওয়ায় আমরা মহিপুর ও কাকিনার মানুষ চরম দুর্ভোগে আছি। পারাপারে ইজারাদার ও তার লোকজন ইচ্ছেমত টাকা আদায় করছে। তাছাড়া সময়ও লাগছে অনেক বেশি।
এলাকাবাসী আশরাফুল ও জাহিদুলসহ কয়েকজন জানান, ইজারাদার সেতু চালু না করে প্রভাবশালীদের যোগসাজসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাশীনদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে টোল আদায় করছে। এতে করে আমরা এলাকাবাসীসহ মহিপুর এলাকার মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। আমার আমাদের প্রাণে তিস্তা সেতু চালুর দাবি করছি।
শাহিনুর বেগম নামে এক পথচারী জানান, মহিপুর ঘাটে পারাপারে খুব সমস্যায় পড়তে হয়। এখানে ইজারাদারের লোকজন খুবই উচ্ছৃঙ্খল। তারা টাকা ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাছাড়া যাত্রী পারাপারে অনেক সময় লাগে। এতে করে রোগীসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
সেতু নির্মাণকাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের এক প্রকৌশলী বলেন, সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ৮৫০ মিটার দীর্ঘ্ এবং ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। খুব দ্রতই চালু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
জেএম