ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘শেখ হা‌সিনা ভালো রাজা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৭
‘শেখ হা‌সিনা ভালো রাজা’ রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে তারানা হালিম। ছবি: বাংলানিউজ

কুতুপালং (কক্সবাজার) থেকে ফিরে: ওপারে সহিংসতা, এপারে শান্তি। ওপারে বাবাকে পুড়তে দেখেছে, মাকে ধর্ষণ হতে দেখেছে- এসব বর্বর ধারণা নিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে রোহিঙ্গা শিশুরা। আশ্রয় পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতৃ স্নেহে ফিরে পেয়েছে মনোবল।
 

সেসব শিশুর সঙ্গে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা বলছেন, এদেশের রাজা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ‘ভারি গম’, অর্থাৎ খুব ভালো রাজা।
 
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন সইতে না পেরে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় এখন কক্সবাজার জেলায়।

উখিয়ার কুতুপালংয়ে সারি সারি তাঁবু-ত্রিপল টানিয়ে আবাস এবং খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ।
 

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টেলিটকের বুথে আসছে ‘খুশির খবরও’

মিয়ানমারের মানবিক বিপর্যয়ে এ দেশে মানবিক সহায়তা পাওয়া মানুষগুলোকে বিভিন্নভাবে সেবা দিয়ে আসছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। সরকারে আশ্রয়, খাদ্য, বস্ত্রের সঙ্গে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ সুবিধাও দিচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। টেলিটকের বুথ স্থাপন করে বিনামূল্যেই কল করার সেবা দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।
 
বুধবার (৪ অক্টোবর) কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য স্থাপিত ক্যাম্প-১ ও ক্যাম্প-২ এ টেলিটকের এই মোবাইল সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। ঢাকা থেকে সংবাদকর্মীরাও তার সঙ্গী হন।
 
শরণার্থী শিশুদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিব্যক্তি নিয়ে তারানা হালিম বলেন, আসা যাওয়ার পথে ছোট ছোট বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করলাম, বললো বাংলাদেশের রাজা খুব ভালো। তারা বলছে ‘ভারী গম’, অর্থাৎ খুব ভালো।
 
তারানা হালিম বলেন, “বিভীষিকাময় দৃশ্য নিয়ে তারা এসেছে। চোখের সামনে বাবাকে পুড়তে দেখেছে, ঘর পুড়তে দেখেছে, মাকে ধর্ষণ করতে দেখেছে--- এসব ধারণা নিয়ে যখন বাংলাদেশে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী বাচ্চাদের গায়ে হাত রেখে বলেছেন, তোমরা যেমন এতিম, আমিও এতিম। তারা বিপন্ন মানবতা নিয়ে এসেছিল, এখানে দেখেছে মানবতা কেমন হয়! এতে তাদের মনোবল দৃঢ় হয়েছে। ”
 
বাংলাদেশের রাজার প্রশংসা রোহিঙ্গা শিশুদের মুখে মুখে জানিয়ে ফেসবুকেও লিখেছেন তারানা হালিম। শিশুদের সঙ্গে কথা বলার দৃশ্য নিয়ে তোলা ছবি দিয়ে তারানা হালিম লিখেছেন, “ক্যাম্পের  পা‌শে জড়ো হয়ে থাকা শিশুদের জিজ্ঞাস করলাম- আমা‌দের প্রধানমন্ত্রী কেমন আদর করলো? কিছুক্ষণ ওরা মুখ চাওয়া-চাও‌য়ি করলো। অর্থাৎ ওরা ভাল করে বাংলা বুঝেনি। পরবর্তীতে স্থানীয় একজন (শিশুদের নিজের ভাষায়) ব‌লে উঠ‌লো, তোমাদের কাছে বাংলা‌দে‌শের রাজার কথা জিজ্ঞেস ক‌রছেন। তখন শিশুরা বললো, 'অনেক আদর করেছে, অনেক অনেক ভালো রাজা’। কো‌নো শিখা‌নো কথা নয়, অন্তর থেকে উচ্চা‌রিত ভালোবাসার কথা। যে কথা শেখাতে হয় না। এবার ছোট্ট রো‌হিঙ্গা শিশু‌দের মুখে হা‌সি দেখা গে‌লো। ওরা আবারও বললো, 'রাজা শেখ হা‌সিনা, ভালো রাজা'। ”
 
তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যসেবা, অন্ন সংস্থান, আশ্রয়স্থলের পর টেলিকম সেবা দিয়ে আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এতে রোহিঙ্গারা খুশি।
 
প্রতিমন্ত্রীর কথা বলার সময়ে কুতুপালংয়ে ২ নম্বর ক্যাম্পে ছোট শিশু কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন নুর কলিমা। নিজের ভাষার সঙ্গে বাংলা মিলিয়ে বলছিলেন, সেনায় বাড়ি পোড়ায় দিছে, নির্যাতন করছে, মারছে। ১৪ দিন আগে আইছে।
 
প্রতিবেশীদের সঙ্গে পালিয়ে এলেও নিজের স্বামীর খোঁজ পাননি কলিমা। হাতে থাকা এমআরপি কার্ড দেখে জানা গেল, তার বয়স ১৮। দেড় বছরের শিশুটি দুপুরের কাঠ ফাটা রোদে কাহিল প্রায়।
 
আশ্রয় ও খাবার পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে ভালো আছে। খাবার পায়, ওষুধ পায়। শেখ হাসিনা রাজা খুব ভালো।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ