ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টেলিটকের বুথে আসছে ‘খুশির খবরও’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৭
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টেলিটকের বুথে আসছে ‘খুশির খবরও’ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের পরিদর্শনকালেও টেলিটক বুথে রাখা মোবাইল ফোন থেকে রোহিঙ্গাদের কথা বলতে দেখা গেছে। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার থেকে: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে স্থাপিত টেলিটকের মোবাইল বুথ ও কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বুধবার (০৪ অক্টোবর) কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্প-১ ও ক্যাম্প-২ এ বুথ পরিদর্শন শেষে শরণার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

শুধুমাত্র লোকাল কলের এ সেবা দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম অপারেটরটি। পাবলিক কল অফিসের (পিসিও) মাধ্যমে এক ক্যাম্পের বুথ থেকে অন্য ক্যাম্পের বুথে ফোন করছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।

বুথে থাকা হ্যান্ডমাইকে সংশ্লিষ্ট শরণার্থীকে ডেকে দেওয়ার পর কথা বলছেন।
 
বেলা দেড়টার দিকে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের পরিদর্শনকালেও টেলিটক বুথে রাখা মোবাইল ফোন থেকে রোহিঙ্গাদের কথা বলতে দেখা গেছে।
 
১ নম্বর ক্যাম্পের সি-২ ব্লকের শরণার্থী আবু আলম বালুখালী ক্যাম্পে থাকা তার আত্মীয় আকবর আলীর সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলতে পেরে ওপাশ থেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আকবরও।
 
আবু আলম দোভাষির মাধ্যমে বাংলানিউজকে বলেন, স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুশি তারা। বিপদে-আপদেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে।
 
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বুথ স্থাপন শুরু করেছে টেলিটক। এ পর্যন্ত ১০টি বুথ স্থাপিত হয়েছে বলে পরিদর্শনকালে বাংলানিউজকে জানান টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী মো. গোলাম কুদ্দুস।
 
১ নম্বর ক্যাম্পের বুথ থেকে টেলিটকের সেবা প্রদানকারী (ভিপি) ফোরকান আলী বাংলানিউজকে বলেন, শুরুর দিকে দিনে ৩/৪টি কল হতো। এখন ১৫-২০টি পর্যন্ত হচ্ছে।  

২ নম্বর ক্যাম্পের বুথের ভিপি সারওয়ার আলম শাকিলও জানান, শুরুতে কম হলেও এখন দিনে ২০/২৫টির মতো কল যাচ্ছে।

১ নম্বর ক্যাম্প থেকে টেংখালী ক্যাম্পে হেসে হেসে নিজের ভাষাতেই কথা বলছিলেন শরণার্থী আতিকুর রহমান।
 
২ নম্বর ক্যাম্পে চল্লিশোর্ধ্ব রোহিঙ্গা জাফর আহমেদ কুতুপালংয়ের ৩ নম্বর ক্যাম্পে থাকা বোন ফাতেমার সঙ্গে কথা বলতে অপেক্ষা করছিলেন।
 
টেলিটকের একজন কর্মী জানান, এ ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা অন্য ক্যাম্পে তার স্বজনের সন্তান প্রসবের খবর দিচ্ছিলেন। জরুরি চিকিৎসাসেবা ও দৈনন্দিন প্রয়োজনেও কথা বলছেন তারা।
 
তারানা হালিম বলেন, অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে রোহিঙ্গাদের টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়া হচ্ছে। যারা দিতে পারছেন না, তারা একবারেই বিনামূল্যে কথা বলতে পারছেন।    
 
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন- মানুষ মানুষের জন্য। টেলিটক মানুষকে সেবা দিয়ে এটাই প্রমাণ করবে- টেলিটক সেবাই দেয়।
 
তিনি জানান, ‘আগে টেলিটকের বিটিএস (টাওয়ার) ছিল সাতটি। নতুন করে আরো ছয়টি বসানো হয়েছে। আমরা লাভের বিষয়টি মাথায় রাখিনি। বিনামূল্যে সেবা দেওয়া দেখে আনন্দিত হয়েছি। যারা পারবেন, টাকা দেবেন। যারা পারবেন না, তাদেরকে বিনামূল্যেই সেবাটি দেবো’।
 
তিনি বলেন, ‘পুরুষরা এক ক্যাম্পে, নারীরা আরেক ক্যাম্পে থাকেন। টেলিটকের মাধ্যমে প্রতিবেশিদের সঙ্গেও কথা বলতে পারছেন তারা। রোহিঙ্গাদের জন্য এমআরপি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেবাটি আরো বাড়বে’।
 
তবে রোহিঙ্গাদের হাতে সিম না যাওয়ার কথা থাকলেও ১ নম্বর বুথে দেখা গেছে, দুপুর পর্যন্ত চারটির সবগুলোই রবি নম্বরে কল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তারানা হালিম বলেন, ‘তাদের অনেক পরিচিত আছেন। হয়তো তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আমরা মাইকিং করেছি যে, রোহিঙ্গাদের হাতে সিম যাবে না’।
 
টেলিটকের এমডি বলেন, ১৯৭৮, ১৯৯০ ও ১৯৯১ সালেও রোহিঙ্গারা এসেছেন। কেউ কেউ ফিরেও গেছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। ক্যাম্পে নিজেদের স্বজনদের পাশাপাশি তাদের সঙ্গেও কথা বলছেন শরণার্থীরা।
 
বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন এবং মন্ত্রণালয় ও অধীন দফতরের কর্মকর্তারাও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৭
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।