মওদুদকে উচ্ছেদ করার ১৯ দিনের মাথায় রোববার (২৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এ সংক্রান্ত মামলায় বাড়িটিতে মওদুদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের মালিকানা অবৈধ বলে সর্বোচ্চ আদালত চূড়ান্ত রায় দেন গত ০৪ জুন।
মওদুদের ভাই মনজুরের নামে বাড়িটি নামজারির নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। রাজউকের আপিলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সে রায় বাতিল করে দিলে প্রমাণিত হয় যে, বাড়িটির মালিকানা মওদুদ বা তার ভাইয়ের নয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করলেও গত ০৪ জুন তা খারিজ হয়ে যায়। ফলে ৩৬ বছর ধরে সপরিবারে বসবাস করে আসা বাড়িটি ছাড়া মওদুদের জন্য অনিবার্য হয়ে পড়ে।
চূড়ান্ত রায়ে হেরে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেছিলেন, ‘দেশে কি আইন নেই? আমি আইনের আশ্রয় নেবো। আদালতের আশ্রয় নেবো’।
‘বিনা নোটিশে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের’ বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ০৮ জুন মওদুদের করা রিট আবেদনের শুনানি আগামী ০২ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করে রেখেছেন হাইকোর্ট।
ঈদের অবকাশকালীন ছুটি শেষে উচ্চ আদালতে শুনানির ওই ধার্য দিনের এক সপ্তাহ আগেই বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে, যে শঙ্কায় ছিলেন পেছনের ৫১ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর হোল্ডিংয়ে ‘কনকর্ড প্যানারোমা’র ৫মতলার ৫০৬ নম্বরের এক আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে অবস্থান নেওয়া মওদুদও।
তার একজন জুনিয়র আইনজীবী শনিবার (২৪ জুন) বাংলানিউজকে বলেছিলেন, ‘এ মামলার রায়ে কোথাও বলা হয়নি যে, বাড়িটির মালিক রাষ্ট্র। বাড়ির মূল মালিক অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের উত্তরসুরিদের সঙ্গে সমঝোতা বা আইনি বোঝাপড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। তার আগেই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হতে পারে অথবা এর অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি’।
এদিকে ওই বাড়ির মূল মালিক পাকিস্তানি নাগরিক মোহাম্মদ এহসান ও অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজ দম্পতির একমাত্র ছেলে করিম ফ্রানজ সোলায়মানও বাড়িটির ভোগদখল পেতে সরকার ও রাজউকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অস্ট্রিয়া থেকে বাংলাদেশে এসে প্রয়াত বাবা-মায়ের উত্তরাধিকার সূত্রে বাড়িসহ জমির একচ্ছত্র মালিক হিসেবে নিজেকে দাবি করে তা ফিরে পাওয়ার আবেদন জানান তিনি। গত ২১ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয়তলার হলরুমে তাকে আইন সহায়তা দানকারী আইনজীবী প্রতিষ্ঠান লিগ্যাসি লিগ্যাল কর্পোরেটের সহায়তায় এ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন সোলায়মান।
উচ্ছেদের পর থেকেই মওদুদ ও তার আইনজীবীরাও দাবি করে আসছেন, সরকার বা রাজউক নয়, বাড়ির মূল মালিক অস্ট্রিয়ার নাগরিক করিম ফ্রানজ সোলায়মানই।
**ভাঙনের শঙ্কায় মওদুদ
** মওদুদের সেই বাড়ির ভোগদখল চান অস্ট্রিয়ার সোলায়মান
বাংলাদেশ: ০৯২৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৭
পিএম/বিএস/এএসআর