ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মানুষ দূরের কথা, সীমান্তে এখন পাখিও ওড়ে না!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
মানুষ দূরের কথা, সীমান্তে এখন পাখিও ওড়ে না! মানুষ দূরের কথা, সীমান্তে এখন পাখিও ওড়ে না!- ছবি: বাংলানিউজ

মেহেরপুরের শুভরাজ সীমান্ত থেকে ফিরে: সীমান্তে মানুষ যাওয়া তো দূরের কথা। এখন আর পাখিও ওড়ে না। সীমান্তে একদিকে যেমন বিজিবির নিশ্ছিদ্র টহল, তেমনি বিএসএফ’রও কড়া টহল ও নজরদারি চলছে সর্বক্ষণ।

সীমান্ত দিয়ে আগে প্রচুর পরিমাণ মাদক দ্রব্য ও অস্ত্রশস্ত্র আসতো। এখন আর তেমন আসে না।

সীমান্তে এখন সবাই ভালো আছে।

এমনটাই বললেন মেহেরপুর সীমান্তবর্তী শুভরাজপুর গ্রামের গৃহবধূ আসমা খাতুন। তবে মেহেরপুর জেলার ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে ৩টি “সীমান্ত হাট” বসার কথা থাকলেও আজ অব্দি সে কর্মসূচির বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য বিস্তর আক্ষেপ রয়েছে সীমান্তবাসীদের মনে। নিজেদের তারা বঞ্চিত ও প্রতারিত বলে ভাবছেন।

গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামে সীমান্তহাট বসার কথা থাকলেও আজো সেটা বসেনি। কাজীপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য উমেদ আলী, স্থানীয় রাজনীতিক আব্দুল আলিম ও স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে জানালেন, তাদের এখানে একটি সীমান্ত হাট বসার জন্য দু’দেশের বিজিবি ও বিএসএফ পর্যায়ে স্থান নির্বাচন পর্যন্ত করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী কাজও এগিয়েছিল বেশ। কিন্তু আজও হাট আর বসেনি। হাট বসানো হলে এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আমূল বদলে যেতো। তাদের আয়-উন্নতি হতো। মানুষ দূরের কথা, সীমান্তে এখন পাখিও ওড়ে না!- ছবি: বাংলানিউজ
৪৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবির সেক্টর কমান্ডার মেজর আ ন ম নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সাইট সিলেকশন হলেও এখন পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে ইতিবাচক নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। সরকারি নির্দেশনা পেলে হাট বসানোর কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া আর ভাগীরতি নদীই বাংলাদেশের মেহেরপুর ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলাকে বিভক্ত করেছে। অথচ স্বাধীনতার আগে দু-দেশের মানুষের মধ্যে ছিলো এক অন্যরকম সেতুবন্ধন। নদী পার হয়ে দু’দেশের মানুষের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অবাধেই আসা যাওয়া চলতো।

জেলার গাংনী, মুজিবনগর ও সদর থানার ৮১ কিলোমিটার জুড়েই রয়েছে সীমান্ত।

বিজিবি সূত্র জানায়, মেহেরপুরের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২২টি সীমান্ত রুট রয়েছে। মানুষ দূরের কথা, সীমান্তে এখন পাখিও ওড়ে না!- ছবি: বাংলানিউজ
৬ বিজিবির অধিনায়ক কর্ণেল আমির মজিদ বাংলানিউজকে বলেন, বিজিবি এবং বিএসএফ নিয়মিত পতাকাবৈঠক, ফ্রেন্ডশিপ টুর্নামেন্ট করায় এবং যৌথভাবে টহল দেওয়ায় উত্তেজনার অনেকটাই প্রশমন হয়েছে। আগে সীমান্তবাসীরা  অনেক অসচেতন ছিলেন। এখন তারা অনেক সচেতন। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য উঠান বৈঠক, মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের সাথে আলোচনা সভা ইত্যাদি আমরা নিয়মিতই করে থাকি। এ কারণে এদেশের সীমান্তবর্তী মানুষ আগের মত আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্তে যায় না।
 
মেহেরপুর পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এর আগে সীমান্ত দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে মাদক যেমন হেরোইন, গাঁজা, চোলাই মদ, দেশি মদ, বিদেশি মদ, বিয়ার, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, কেডিন, ফেনসিডিল, তাড়ি, প্যাথেডিন, টিডি জেসিক, ভাং, কোডিন ট্যাবলেট, ফার্মেন্টেড, ওয়াশ (জাওয়া), বনোজেসিক ইনজেকশন (বুপ্রেনরফিন), টেরাহাইড্রোবানাবিল, এক্সএলমুগের, মরফিন, ইয়াবা, আইএসপিল, টলুইন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, মিথাইল, ইথানল ও কিটোন আসতো। কিন্তু এখন এগুলো আর আনার সুযোগ পায় না চোরাকারবারীরা।

সীমান্তবাসীদের অনেকেই এমনটিই জানালেন। সব মিলিয়ে সীমান্তবাসীর মধ্যে এখন শান্তি বিরাজ করছে। খাদিজা-আশরাফ ফাউন্ডেশন

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
আরআইএস/জেএম/

**
আম্রকাননের আমেই বিভিন্ন কোম্পানির আচার-জুস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।