ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী- ছবি: মানজারুল ইসলাম

মেহেরপুর থেকে: জৈষ্ঠ্যের চরম গরম। হাঁফিয়ে উঠছে সবাই। সর্বত্র অস্বস্তি। রোদে বের হলেই শরীর থেকে দর দর করে গড়িয়ে পড়ছে ঘাম। সব ক্লান্তিই যেন উবে যাচ্ছে সূর্যের আলো ছায়ায় টসটসে কাঁচা-পাকা আম দেখে। এসব টসটসে পাকা আম সবার মন কেড়ে নিচ্ছে।

মেহেরপুর জেলার যেদিকেই চোখ যাচ্ছে, গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা আম। যত দূর চোখ যায়, কেবলই আমের বাগান।

  ইচ্ছা করলেই যে কেউ ছুঁতে পারছে আমগুলো। তবে সবচেয়ে বেশি আম হয়েছে মুজিবনগর ও গাংনীতে।  

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কিংবা রাজশাহী নয়, খুলনা বিভাগের মেহেরপুর জেলায় এলে বিস্তৃত বাগানে স্নিগ্ধ, শান্তিময় এক পরিবেশে আমের ঘ্রাণ ও ভোজন দুইটাই উপভোগ করতে পারবেন। দিনভর দেখা মিলবে একের পর এক গাছ থেকে আম পাড়ার দৃশ্য।
মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী- ছবি: মানজারুল ইসলাম
মেঠো পথ কিংবা পিচ ঢালা পথে সারি সারি আম বোঝাই ভ্যান কিংবা পিকআপের ছুটে চলার দৃশ্যও মনে দোলা দেবে যে কারো। মোড়ে মোড়ে অলিগলিতে আমওয়ালাদের হাঁকডাকে সরগরম চারদিক।

শনিবার (২০ মে) মুজিবনগরের আম চাষি রসুল মিয়া জানান, মেহেরপুরজুড়ে এখন আম আর আম। শহরের পাড়া-মহল্লার-অলিগলি থেকে গ্রামের হাটবাজার সর্বত্রই আমের কারবার। মেহেরপুরের সুমিষ্ট ও রসালো এ আমের কদর সবখানে।  

মজমপুর এলাকার আম বাগানের মালিক মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ২০ কেজির এক ক্যারেট আমের দাম ১ হাজার টাকা। আবার কোথাও এক মণ বিক্রি হয় ১৫শ’ থেকে ১৮শ’ টাকায়। তবে স্থানীয় প্রশাসন থেকে হিমসাগর আম পাড়ার নির্দেশ ২৫ মে থেকে। কিন্তু অনেকে এ নির্দেশ অমান্য করে আম পাড়ছে। হিমসাগরের দাম একটু বেশি বলে জানান তিনি।
মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী- ছবি: মানজারুল ইসলাম
মুজিবনগরের স্কুল শিক্ষক রহমত আলী বলেন, আমকেন্দ্রিক বাণিজ্য নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত  মেহেরপুরের মানুষ। গত কয়েকদিন থেকেই আমের কারবার শুরু হয়েছে এ জেলায়। গড়ে উঠেছে মৌসুমী আমের দোকানপাট। সেখানে কেনাবেচাও জমে উঠেছে।

আমের রাজ্য ভ্রমণের সাথে সাথে অনেকেই বাগান থেকে টসটসা আম পেড়ে কিনে নিয়ে যান বলে জানান এ স্কুল শিক্ষক।

জানা যায়, মেহেরপুর জেলায় এবার ১৫ থেকে ২০ হাজার আম চাষি ২২  ‘হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছেন। যেখান ৩৩ হাজার মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

জেলায় উৎপাদিত আমের মধ্যে রয়েছে হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, ফজলি ও আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আম।
মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী- ছবি: মানজারুল ইসলাম
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ২২শ’ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ ভাগই হিমসাগর আমের চাষ হয়েছে। ইউরোপে আম রপ্তানি করার জন্য জেলার ৬৫ জন আম চাষির সাথে চুক্তি করা হয়েছে। এসব চাষি ব্যাগিং পদ্ধতিতে আমের চাষ করেছেন।
মেহেরপুর যেন আমের আরেক রাজধানী- ছবি: মানজারুল ইসলাম
সুস্বাদু আম হওয়ায় চাহিদা বেড়ে চলতি বছর আড়াই শ’ থেকে ৩০০ মেট্রিকটন আম ইউরোপে যাবে বলে আশা করছেন জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ বাংলানিউজকে বলেন, মেহেরপুরের সুস্বাদু হিমসাগর আম এবারো রফতানি হবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে। আন্তর্জাতিক বাজারে হিমসাগর আমকে ছড়িয়ে দিতে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২০১৫ সালে উদ্যোগ নেয়। ক্রমান্বয়ে আমের চাহিদা বিদেশে বেশি বাড়ছে। এটা আমাদের জন্য একটি সুখবর। খাদিজা-আশরাফ ফাউন্ডেশন

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা,  মে ২০, ২০১৭
জিপি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।