ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নাগরিকের সুরক্ষা দানে গতিবিধি জানাবে ‘নগর অ্যাপ’

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৭
নাগরিকের সুরক্ষা দানে গতিবিধি জানাবে ‘নগর অ্যাপ’ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। ছবি: বাদল-বাংলানিউজ

ঢাকা: আজ থেকে দু’বছর আগে ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র হয়েছিলেন আনিসুল হক। সে বছর ৬ মে শপথ নেন আর ১৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার বুঝে নেন।

এরই মধ্যে তেজগাঁর সাতরাস্তায় পথের ওপর থেকে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদের মতো বেশ কিছু ইতিবাচক কাজও করে দেখিয়েছেন। প্রমাণ দিয়েছেন আপসহীন স্বভাবের।

দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলানিউজের সঙ্গে মঙ্গলবার (১৬ মে) একান্ত আলাপচারিতায় বসেন মেয়র। তাতে আগামী দিনের ভাবনা, ভিশন ও স্বপ্ন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। পাশাপাশি পুরনো দিনের চ্যালেঞ্জের কথাও শোনাতে ভোলেননি এই উদ্যমী নগরপিতা। আজ পড়ুন দুই পর্বের সেই আলাপচারিতার দ্বিতীয় পর্ব :

বাংলানিউজ: আপনি বলেছিলেন ঢাকার যানজট নিরসনে ইউলুপ করবেন। সেই কাজের বর্তমান অবস্থা কী?

 
আনিসুল হক: ঢাকার যানজট কমাতে গাজীপুর থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত ২১টি ইউ-টার্ন হবে। এসবের মধ্যে ১১টি ডিএনসিসি’র আওতাধীন। ১০টি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন। খুব শিগগিরই ডিএনসিসি’র আওতাধীন ইউ লুপগুলোর জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতরাস্তা থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত এই ১১টি ইউলুপ হবে। এতে যানজট অনেক কমে যাবে। তাছাড়া আমরা বাস নামাচ্ছি।
 
বাংলানিউজ: আপনার নির্বাচনী ইশতেহারে নাগরিকদের মিলনকেন্দ্র বা সিভিক সেন্টার করার কথা বলেছিলেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক।  ছবি: বাদল-বাংলানিউজ
 আনিসুল হক: হ্যাঁ বলেছিলাম। সেই চিন্তা থেকে বনানীতে একটি সিভিক সেন্টার করা হচ্ছে। সেটার কাজও শুরু হয়ে গেছে। নাম কি হবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। তবে অত্যাধুনিক ওই সেন্টারে পড়া, খেলা, পেইন্টিং, গল্প করা আর আড্ডা দেবার  মত সব সুবিধাই থাকবে।
 
বাংলানিউজ: ডিএনসিসি’র প্রতিটি ওয়ার্ডে কবে থেকে এলইডি বাতির আলো দেখা যাবে?‘নগর অ্যাপ’
 
আনিসুল হক: একবারে তো সব এলাকায় করা সম্ভব হবে না। আমরা চেষ্টা করছি শিগগিরই এলইডি বাতি স্থাপনের কাজ শুরু করতে। এনিয়ে আমাদের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অনেক আলাপ-আলোচনা করতে হয়েছে। এলইডি বাতির অধিক আলো অনেক সময় ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেজন্য একটু সময় লাগছে। আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে উন্নতমানের এলইডি বাতিই দিচ্ছি।
 
বাংলানিউজ:
নাগরিকদের ভেজালমুক্ত খাবারের নিশ্চয়তা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কি ?
 
আনিসুল হক: নগরীর ভাসমান/কর্মজীবী জনগোষ্ঠীর নিরাপদ পথখাবার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘এফএও’  এর সহযোগিতায় ২৭৫টি পথখাবারবাহী গাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বাজার মনিটরিং, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও ভেজালবিরোধী অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক।  ছবি: বাদল-বাংলানিউজ
বাংলানিউজ: আপনারা যেসব রাস্তা সংস্কার করছেন সেগুলো কি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা থেকে নাকি ছয় মাস, এক বছরে আবারও কাজ করতে হবে?
 
আনিসুল হক: প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের কনস্ট্রাকশন কাজ ‘এ’ গ্রেডের।   কোনো কাজেই ৫-৭ বছরের আগে হাত দিতে হবে না। ‘নগর অ্যাপ’
 
বাংলানিউজ: বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। আগামীতে আরও নতুন পরিকল্পনা আছে কি ?
 
আনিসুল হক: বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা ৫২টি এসটিএস নির্মাণ করেছি। এছাড়া ৮টি ওয়ার্ডের সড়ক পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য পরিবহন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেয়া হয়েছে। আমরা অত্যাধুনিক সাকার মেশিন সংগ্রহ করেছি। যে মেশিন দিয়ে ১৫-২০ বছরের ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার করা সম্ভব। এছাড়ার রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির অত্যাধুনিক রোড সুইপার মেশিন সংগ্রহ করেছি। এরকম আরও অনেক চমক থাকবে নগরবাসীর জন্য।
 
বাংলানিউজ: গত বছর ‘নগর অ্যাপ’ চালু করলেন। এতে নাগরিকদের সাড়া কেমন?
 
আনিসুল হক: আমরা অনেক অভিযোগ পাচ্ছি এই অ্যাপসের মাধ্যমে। নাগরিকরা যেকোনো অভিযোগ এই অ্যাপসের মাধ্যমে পাঠালে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান, প্রধান নির্বাহী ও আমার কাছে চলে আসে। আমর‍া এর সমাধান দিই। নগর অ্যাপ শুধু অভিযোগ সমাধানই দেয় না, এই অ্যাপসের মাধ্যমে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে।

ডিজিটাল মোবাইল অ্যাপ ‘নগর’ এর মাধ্যমে নাগরিকরা যে কোনো ভোগান্তির বর্তমান অবস্থার ছবি তুলে পাঠালে তার সমাধান পাবেন সহজেই। এছাড়া অ্যাপের নিরাপত্তা-ফিচার ব্যবহার করে প্রিয়জনের গতিবিধি ও অবস্থান জানা যাবে। কেউ বিপদে পড়লে মাত্র তিন সেকেন্ড অ্যাপের ‘সেভ আওয়ার সোল বা এসওএস’ আইকন চেপে ধরলে স্যাটেলাইটের সহায়তায় পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও নিকটস্থ পুলিশের কাছে বিপদসংকেত বেজে উঠবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ছবি, অবস্থান ও কণ্ঠ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাবে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে। অ্যাপটির ট্র্যাকিং সুবিধা ব্যবহার করে প্রিয়জনের গতিবিধি ও অবস্থান জানা যাবে। অ্যাপটির মাধ্যমে নিকটস্থ হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন, বাসস্টপ, ফায়ার সার্ভিস, এটিএম বুথসহ জরুরি বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা জানা যাবে।

বাংলানিউজ: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আনিসুল হক: ধন্যবাদ।

** ‘পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়াল খুলে দিতে চাই’

বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৭
এসএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।