ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হাওরে বন্যা: আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তোপের মুখে তারা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
হাওরে বন্যা: আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তোপের মুখে তারা

ঢাকা: বন্যা কবলিত হাওরাঞ্চলে সহায়তা নিয়ে না যাওয়ায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তোপের মুখে পড়তে হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের কর্মকর্তাদের। এছাড়া বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে সমালোচনা হয়েছে সভায়।
 
 

ইমেজ ঢাকতে বন্যা কবলিত হাওর এলাকায় নিজ নিজ মন্ত্রণালয় এবং দফতরের পক্ষে থেকে কর্মকর্তাদের পাঠানোর তাগাদা এসেছে। পাশাপাশি কর্মকাণ্ডগুলো বিটিভিসহ বেসরকারি টেলিভিশনেও প্রচারের জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সভা সংশ্লিষ্ট সূত্র।


 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে রোববার (২৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  
 
ঢাকা থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি বন্যা কবলিত এলাকায় না যাওয়ায় সভায় সমালোচনা করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।  
 
পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্রয়োজনমতো না পাওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় কলেরা দেখা দিয়েছে বলে একজন কর্মকর্তা নজরে আনেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কেউ যায়নি বলে সভায় জানানো হয়।
 
তখন মন্ত্রী বলেন, নিজেরা কেউ যান। ওখানে যারা আছেন তারা কাগজে কলমে যায়, বাস্তবে যায় না।
 
তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, স্যার মন্ত্রণালয় থেকে যাবো।
 
মন্ত্রী বলেন, ওখানে গেলে মানুষ খুশি হয়। প্রত্যেক মন্ত্রণালয় থেকে গেলে পরিবেশ অনুকূলে থাকে।
 
ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, আপনারা মনে করেন দুর্যোগ শুধু দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের, অন্য মন্ত্রণালয়ের দায় নয়। অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আছে। ওখানে মানুষ কষ্টে আছে। গেলে অনুকূলে থাকে পরিবেশ।
 
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে উদ্দেশ্য করে দুর্যোগ সচিব শাহ কামাল বলেন, ওখানে যে কাজ করবেন তার ব্যানার করেন, ভিজিবল করেন।
 
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের ঢাকা থেকে কেউ যায়নি বলে জানানো হয় সভায়।
 
তখন পানি সচিব জাফর আহমেদ খান বলেন, মানুষের পাশে থাকাটাই তাদের আনন্দ।
 
বন্যা এলাকা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাঁধের কাজ মানসম্পন্ন না। আগাম কাজও করে না।
 
সুনামগঞ্জ পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে দুর্যোগ সচিব বলেন, স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন বাঁধ নির্মাণের আগাম ১০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছে।
 
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জানানো হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এবার ৬০-৭০ বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি বন্যা হয়েছে হাওরে।
 
পানি সচিব জানান, হাওর কড়াইয়ের মতো। মাঝখানে ধান চাষ করা হয়। ধান আনা-নেওয়া এবং অন্যান্য কারণে বাঁধগুলোর ৫১০ জায়গায় কেটে দেওয়াছিল। ৭০ বছরে এমন বন্যা দেখেনি স্থানীয়রা।
 
বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগে কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপর আগে থেকেই নেগেটিভ মনোভাব, এগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।
 
তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তিনজনিত কারণে এ বন্যা। নতুন করে স্ট্যাডি করে সাড়ে ছয় মিটারের বাঁধ আরও এক মিটার উঁচু করার জন্য প্রকৌশলীদের কাজে লাগানো হয়েছে।
 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা বলেন, এখন নিচু এলাকাতেও কৃষক ধান চাষ করে। বাঁধ কাটা থাকলে দ্রুত মেরামত করা যায় না।
 
আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, তিনদিন আগে বন্যার পূর্বাভাস দেয়, এটা কীভাবে ১০-১৫ দিন আগে পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।  
 
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিনিধিকে উদ্দেশ্য করে সভায় বলা হয়, চিঠি দেন যেন সঠিকভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কারণে বদলি করা পোস্টগুলো দ্রুত পূরণের সুপারিশ করা হয় সভায়।
 
মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন করেন, প্রচার করেন নিজ নিজ উদ্যোগ। আমাদের ৩০ জন মন্ত্রীকে এক মিনিট করে দেখিয়ে সময় নষ্ট করার দরকার নেই। মানুষকে সচেতন করেন।
 
ত্রাণ বিতরণ, সহায়তা কার্যক্রম প্রচারের জন্য বিটিভির টিম পাঠানো এবং অন্য টেলিভিশনে কীভাবে কাভারেজ বেশি করা যায় তা নির্ধারণ করতে বলা হয় সভায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।