ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অসত্য সংবাদ: ‘প্রথমআলো’তে আগুন, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১০
অসত্য সংবাদ: ‘প্রথমআলো’তে আগুন, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন

ময়মনসিংহ: ‘প্রথমআলো’ পত্রিকায় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রীদের জড়িয়ে কুরুচিকর সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল থেকে ক্লাস বর্জন শুরু করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, দুপুর ১ টায় প্রথম ব্যাচের সঙ্গীত বিভাগের ৬ষ্ঠ সেমিস্টার ফাইনালের লিখিত পরীক্ষা বর্জন করেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সঙ্গীত বিভাগ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ‘প্রথমআলো’ পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ করেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীরা বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম.বিডিকে জানায়, শনিবার দৈনিক ‘প্রথমআলো’ পত্রিকার শেষ পাতায় ‘কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিকূল পরিবেশে ছাত্রী-শিক্ষিকারা’ শিরোনামে একটি সংবাদ ছাপা হওয়ার পরই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদই ওইদিন বিকেলে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্রীরা।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকাল থেকেই সঙ্গীত, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ডাক দেন। ফলে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যায়ের কোনো বিভাগেই ক্লাস হয়নি।

দুপুর দেড়টায় ৫ টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের নিচে জড়ো হয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় শনিবারের প্রথমআলোর ১৫ থেকে ২০ টি কপিতে আগুন দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও প্রথম আলোর রিপোর্টকে ‘ভূয়া ও অসত্য’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলকারীরা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে চুরুলিয়া মঞ্চে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সভা করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সঙ্গীত বিভাগের বাবু, তারেক, শর্মিষ্ঠা, ইংরেজি বিভাগের বাশার, সিদ্দিক, রতন, মনির, নাজনীন, রনি, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের রাকিব, আব্দুল্লাহ, মতিন প্রমুখ।

সমাবেশে ছাত্রীরা বলেন, ‘কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা প্রতিকূল নয়, অনুকূল পরিবেশেই রয়েছি। শিক্ষকরা আমাদের পিতৃতুল্য অভিভাবক। তারা আমাদের নিজেদের মেয়ের মতোই স্নেহ করেন। অথচ আমাদের বরাত দিয়ে প্রথম আলো কুরুচিকর মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়েছে। এ রিপোর্ট করার সময় আমাদের বক্তব্য নেয়া হয়নি। আমাদের মর্যাদাহানির জন্য আমরা এর বিচার চাই। ’
 
সমাবেশে ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েই ঘাপটি মেরে থাকা একটি মহল ২২ জুলাই’র ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিতভাবে এসব করছে। এতে আমাদের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। প্রশাসনকে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ছাত্রীদের মর্যাদাহানির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো বিহিত না করলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে ছাত্রীরা হুঁশিয়ারি দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বক্তব্যের জের ধরে একাধিক ছাত্রী বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, দোলনচাঁপা হলের প্রভোষ্ট পদ থেকে রশিদুন্নবীকে কোন অভিযোগে সরিয়ে দেয়া হয়েছে, এর জবাব ৩ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দিতে হবে।

পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বরাবরে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।

এ ব্যাপারে যোগযাযোগ করা হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

ত্রিশাল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।