ঢাকা: পরিবেশের ক্ষতিসাধনের দায়ে নড়াইলে একটি অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পাশাপাশি ভাটা মালিককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও দুই লাখ ইট জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার নড়াইল জেলার কালিয়া থানার পানিপাড়া নামক স্থানে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী। তাকে সহায়তা করে কালিয়া থানা পুলিশ, যশোর র্যাব ও খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, এর আগে এ অবৈধ ইটভাটা অপসারণের জন্য মালিককে পরপর দুই দফা নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরো জানান, অবৈধ ইটভাটা নির্মাণের ফলে এলাকায় পরিবেশের ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। ইটভাটার চারপাশে রয়েছে হাজার হাজার ফলদ ও বনজ বৃক্ষ, ঘরবাড়ি এবং মধুমতি নদী।
মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী জানান, ইটভাটার মালিক মধুমতি নদীর তীরের প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট মাটি কেটে তিন থেকে চার ফুট গভীর গর্ত করায় ওই এলাকায় নদী ভাঙ্গনের আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি এক থেকে দেড় ফুট গর্ত করে টপ সয়েল উত্তোলন করে ইটভাটায় ব্যবহার করা হয়। এতে ঐ এলাকা নীচু জমিতে পরিণত হয়ে বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে ইটভাটা সংলগ্ন মধুমতি নদীর তীরে সরকারি বন্যা প্রতিরোধ বাঁধের উপর দিয়ে ইট বোঝাই ট্রাক চলাচলের ফলে বাঁধটিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এ ইটভাটার অনুকূলে পরিবেশ ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স কিংবা বিএসটিআই এর সিএম লাইসেন্স কিছুই নেই। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্থানীয় গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে এ ইটভাটাটি তৈরি করা হয়েছে বলে স্থানীয় জনসাধারণ অভিযোগ করে।
অভিযানকালে ইটভাটার মালিক, ম্যানেজার ও কর্মচারীরা সকলেই পালিয়ে যায়। এসময় শ্রমিক, কর্মচারী এবং ট্রাকটরের সহায়তায় ইটভাটার মূল স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হয়।
পরিবেশের ক্ষতিসাধনের অপরাধে মালিক শেখ আব্দুল মান্নানকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি অবিলম্বে ধ্বংস প্রাপ্ত সমস্ত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইটভাটা থেকে এক লাখ ৯০ হাজার ইট এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১১