ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডিপজল অনুতপ্ত !

সাঈদুর রহমান রিমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট<br>জাহিদুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১০
ডিপজল অনুতপ্ত !

ঢাকা: ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আফতাব আহমেদকে মারধরের ঘটনায় ঢাকাই সিনেমার খলনায়ক মনোয়ার হোসেন ডিপজল অনুতপ্ত। তিনি বলেছেন, ‘সেদিন একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।

’ তবে এ জন্য তিনি ওই ট্রাফিক কনস্টেবলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণকেও দায়ী করেন।

পাশাপাশি নিজের চাচার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে ডিপজল বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ থাকার কারণে ছোট ঘটনাকে ওই চাচা বড় আকারে ছড়িয়ে দিয়েছেন। থানা-পুলিশকে আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন। ’

ডিপজল বলেন, ‘আমি একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও কনস্টেবল আমার শার্টের কলার চেপে ধরে ঘুষি মেরেছে, হাতের লাঠি দিয়ে গরু পেটানোর মতো করে আমাকে পিটিয়েছে। তখন আমার সহযোগীরা রাগ থামিয়ে রাখতে পারেননি। তারা ট্রাফিক কনস্টেবলকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে হয়তো দু-চারটা কিল ঘুষি দিয়ে ফেলেছে। আমি নিজেও তাকে একটা চড় দিয়েছি। ’

রিমান্ডে দারুস সালাম থানায় জিজ্ঞাসাবাদকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নাজমুল হুদার কাছে মনোয়ার হোসেন ডিপজল এসব কথা বলেছেন। গত বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে ডিপজলকে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে দারুসসালাম থানার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

ট্রাফিক পুলিশকে মারধর ও বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়া সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ডিপজলকে অন্য আসামিদের মতো থানার হাজতখানাতেই রাখা হয়েছে। বুধবার রাতেই তাকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, বৃহস্পতিবার রাতে আবারও করা হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে দারুস সালাম থানায় পৌঁছে হাজতখানার মেঝেতে একটা চাদর মুড়ি দিয়ে ডিপজলকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুম থেকে জেগে ধীরে-সুস্থে উঠে বসেন তিনি। খলনায়কসুলভ কোনো ভাব ছিল না তার চোখে মুখে। খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হেসে হেসে কথা বলতে থাকেন তিনি। উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ডিপজল বলেন, ‘সারারাত ঠাণ্ডায়,জ্বরে ভুগেছি। এখনও জ্বর আছে। হাত-পাও ব্যথা করছে। ’

হাজতখানার সামনে উপস্থিত বাংলানিউজ প্রতিবেদককে কুশল জিজ্ঞাসা শেষে বলতে থাকেন ডিপজল : ‘হাজতখানাটা এত নোংরা, চারপাশে দুর্গন্ধের ছড়াছড়ি। এখানে কীভাবে যে আসামিরা থাকে!’

রিমান্ডে দারুস সালাম থানায় নেওয়ার পর বুধবার রাতে তার কয়েকজন শুভাকাক্সী খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার কেউ যাননি ডিপজলের কাছে। পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-স্বজনদের কেউ দারুসসালাম থানামুখো হননি বলে ওসি এমএ মালেক জানিয়েছেন। তবে ডিপজলের অফিস থেকে দু’বছর আগে চাকুরিচ্যুত পিয়ন জহিরউদ্দিন বাবুল (২৪) খবর পেয়েই ছুটে এসেছেন নোয়াখালীর গ্রাম থেকে। তিনিই ডিপজলের প্রয়োজন অপ্রয়োজনের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

থানার সামনে জ্বরের ওষুধ নিয়ে যাওয়ার সময় জহিরউদ্দিন বাবুল বাংলানিউজকে বললেন, ‘টিভি চ্যানেলের খবর দেখে জানতে পারি-ডিপজল স্যার হাজতে আছেন। তার নুন খাইছি। তাই কৃতজ্ঞতার কারণেই ছুটে এসেছি। তার এই বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোটা কর্তব্য মনে করেছি। ’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নাজমুল হুদা জানান, ওই মামলার প্রধান আসামি ডিপজল আত্মসমর্পণ করলেও তার সহযোগীরা এখনও গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তাদের গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।