ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভৈরবে উলফার ২ নেতা গ্রেপ্তার, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০
ভৈরবে উলফার ২ নেতা গ্রেপ্তার, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার

ঢাকা: কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার লক্ষ্মীপুর থেকে শনিবার ভোরে ভারতের বিচ্ছিনতাবাদী সংগঠন উলফা’র দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৯ এর একটি দল।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উলফা নেতা মেজর রঞ্জন চৌধুরী (৪৬) ও প্রদীপ মারাক (৫৭)।



পরে রাজধানীতে র‌্যাব সদর দপ্তরে শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই দুই উলফা নেতা বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন।

র‌্যাব-এর সহকারী পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিকে জানান, ভৈরব-ঢাকা মহাসড়কের লক্ষ্মীপুর এলাকায় ভোর সাড়ে চারটার দিকে রঞ্জন চৌধুরী এবং প্রদীপ মারাককে দেখে র‌্যাব-৯ দলটি চ্যালেঞ্জ করে। এ সময় তারা পালানোর চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে ধরে ফেলেন।

তাদের দেহ এবং ব্যাগ তল্লাশি করে ১টি রিভলবার, ১টি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলি, ৪টি হাত বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

পরে উলফার দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকার র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়।  

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত উলফা নেতা রঞ্জন চৌধুরীর (৪৬) বাড়ি  ভারতের আসাম রাজ্যের গৌরিপুর থানার মধু শোলমারী এলাকায়। তিনি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানার গজনী এলাকায় আত্মগোপন করেছিলেন। তার সহযোগী প্রদীপ মারাকের (৫৭) বাড়ি আসামের একই থানার বাঁকাকুড়া গ্রামে।
 
র‌্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা আরও জানান, গতকাল শুক্রবার র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, এ দুইজন উলফা নেতা ভৈরব থানার লক্ষীপুর এলাকায় অবস্থান করছেন।

পরে র‌্যাব সদর দপ্তর এর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৯ (ভৈরব ক্যাম্প) এর সমন্বয়ে একটি বিশেষ দল শনিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে লক্ষীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি, ৪টি স্থানীয়ভাবে তৈরি বোমা এবং বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা আরও জানান, রঞ্জন চৌধুরী বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে ছদ্মবেশে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। বিভিন্ন সময় তিনি রঞ্জন সিসিম, রঞ্জন চৌধুরী, মেজর রঞ্জন, প্রদীপ রায়, দীপজ্যোতি,  রঞ্জু বাড়ৈ, মাসুদ চৌধুরী নাম ব্যবহার করেছেন।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রঞ্জন চৌধুরী নিজেকে উলফা নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি ১৯৯০ সালে উলফা সংগঠনের অধীনে তিন মাসের সামরিক প্রশিণ নেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র এবং গ্রেনেড চালনায় বিশেষ পারদর্শী।

র‌্যাব আরও জানায়, ১৯৯৫ সালের জুন মাসে রঞ্জন চৌধুরী উলফার শীর্ষ নেতা পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ভুটানে যান। সে সময়ে পরেশ বড়–য়া তাকে বাংলাদেশে অবস্থানরত উলফা সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের নির্দেশ দেন। ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে ভুটান থেকে ভারত আসার পথে রঞ্জন চৌধুরী গ্রেপ্তার হন। প্রায় এক বছর ভারতের গোহাটিতে কারাবন্দি থাকার পর তিনি ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে ছাড়া পান। ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রঞ্জন চৌধুরী বাংলাদেশে অবস্থানরত উলফার সামরিক প্রধান পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করতে কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন। পরে স্থানীয় জনগণের সন্দেহ দূর করতে ২০০১ সালে শেরপুর সীমান্ত এলাকার জনৈক মণীন্দ্র হাগিদরের মেয়ে সাবিত্রী ভ্রুম’কে বিয়ে করেন। ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে উলফার শীর্ষ নেতা পরেশ বড়ুয়া ও শশধর চৌধুরীসহ কয়েকজন উলফা নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১৫২৭ ঘন্টা, জুলাই ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।