দেশে চিকিৎসক সংকট নিরসনে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু এখনো নিয়োগবঞ্চিত প্রায় দুই হাজার চিকিৎসককে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাকলাইন রাসেল।
রোববার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি বলেন, এ চিকিৎসকেরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ বঞ্চিত।
সরকারের যুক্তি একসঙ্গে বেশি ডাক্তার নিলে ভবিষ্যতে জটিলতা হবে তা ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন তিনি। ডা. সাকলাইন বলেন, এরই মধ্যে দেশে প্রায় ১৩ হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এ ২ হাজার চিকিৎসককে নিয়োগ দিলে কোনো সমস্যা হবে না, বরং জনগণ উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, ৩৯তম বিসিএসে অতিরিক্ত ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের নজির রয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকার চাইলে এবারও একইভাবে অতিরিক্ত নিয়োগ দিতে পারে। নতুন বিসিএস আয়োজন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল-তাই বর্তমান উত্তীর্ণদের নিয়োগই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান।
ডা. সাকলাইন রাসেলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ৪৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ চিকিৎসক ডা. ইসরাফিল আহম্মেদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রায়ই উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসক সংকটের খবর আসে। কিন্তু একজন চিকিৎসককে দিনে ১৫০ থেকে ২০০ রোগী দেখতে হয়—এ অবস্থায় মানসম্মত সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
ইসরাফিল আহম্মেদ জানান, দেশের ৪৪৫টি উপজেলায় গড়ে তিন থেকে চারজন চিকিৎসক কর্মরত আছেন, যেখানে অন্তত ২০ থেকে ২৪ জনের প্রয়োজন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেন্টালসহ ৩১২০ জন চিকিৎসককে নিয়োগ দিয়েছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, আমরা নীতিগতভাবে চিকিৎসকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। আপনারা ন্যায্য দাবি তুলেছেন। করোনার সময় চিকিৎসকেরাই ছিলেন সামনের সারিতে, অথচ এখনো তাদের নিয়োগ নিয়ে জটিলতা চলছে। চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার ৯৮০টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। অথচ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একমাত্র ভরসা এসব সরকারি প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএসের মাধ্যমে ডেন্টাল চিকিৎসক বাদে ২ হাজার ৮২০ জন চিকিৎসককে সহকারী সার্জন পদে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ৪৪তম থেকে ৪৭তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া অসমাপ্ত থাকায় ওই বিসিএসগুলোর অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকেই ৪৮তম বিসিএসে পুনরায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলে প্রায় ২,০০০ রিপিট প্রার্থী রয়েছেন।
জেএইচ