গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনজন ফায়ার ফাইটারসহ চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অগ্নিকাণ্ডে জীবন রক্ষার মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের তিনজন সাহসী ফায়ার ফাইটারসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, অগ্নি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিয়োজিত থাকেন। নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে তাঁরা অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের এই আত্মত্যাগের কাছে জাতি চিরঋণী। এই দুর্ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিল যে, দায়িত্ব পালনের সময় তারা কত বড় ঝুঁকি নেন। তাদের এ মহৎ ত্যাগ জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই দুর্ঘটনায় আমরা শুধু কয়েকজন প্রাণ হারাইনি, বরং দৃষ্টান্ত দেখলাম আমাদের সাহস, মানবিকতা আর কর্তব্যনিষ্ঠার প্রতীকের। ফায়ার সার্ভিস দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সাহসী বাহিনী। সংকটময় সময়ে তাঁরাই প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আজ সেই মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের জীবন দিতে হয়েছে। এটি সমগ্র জাতির জন্য গভীর শোকের বিষয়।
তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সান্ত্বনা জানিয়ে বলেন, আপনাদের প্রিয়জনরা নিছক প্রাণ হারাননি, তাঁরা জাতির জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষ তাঁদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমি আপনাদের বেদনা ভাগ করে নিচ্ছি, এবং দোয়া করছি আল্লাহ যেন আপনাদের ধৈর্য ও শক্তি দেন এই কঠিন সময়ে।
প্রধান উপদেষ্টা নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, এই বেদনাবহ ক্ষতি কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তবে তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে—যাতে আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে পারি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর সাহারা মার্কেটে কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের চারজন গুরুতর দগ্ধ হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ, ২৪ সেপ্টেম্বর ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা, ২৭ সেপ্টেম্বর খন্দকার জান্নাতুল নাঈম এবং গত ২৬ সেপ্টেম্বর দোকান কর্মচারী আল-আমিন হোসেন বাবু (২২) মারা যান।
এমইউএম