ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন না হলে স্বাধীন এবং আদর্শ দুদক প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে টিআইবির সঙ্গে দুদকের সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন।
দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে অধিকতর বেগবান ও গতিশীল করতে পাঁচ বছর মেয়াদী সমঝোতা স্মারক সই হয়। অনুষ্ঠানে দুদকের পক্ষে মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এবং টিআইবির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সমঝোতা স্মারক সই করেন। সমঝোতা স্মারকের আওতায় দুদক ও টিআইবি দুর্নীতি প্রতিরোধে গণসচেতনতা, পদ্ধতিগত উৎকর্ষ এবং নৈতিকতার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, জনসম্পৃক্ততা, অধিপরামর্শ ও প্রচারাভিযান পরিচালনার পাশাপাশি যৌথ উদ্যোগে গবেষণা, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদক সংস্কারের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রতিবন্ধকতা নেই। আশু করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। আমরা সংস্কারে যে সুপারিশগুলো জমা দিয়েছি, তার দুটি দিক রয়েছে। একটা দিক হচ্ছে সরকারের সিদ্ধান্তক্রমে সুপারিশ বাস্তবায়ন, কিছু সুপারিশ আছে যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য দরকার। সেগুলো নিয়ে ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়েছে। সুখবর হচ্ছে- দুই-একটি ছাড়া সবগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য পোষণ করেছে।
তবে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বড় দল, যারা ক্ষমতায় যাবেন বলে ভাবছেন তারা কিছু কিছু নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন। সেগুলো বিষয় নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নিচ্ছি। তিনি বলেন, দুদককে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও সরকারের আওতার বাইরে গিয়ে নিয়োগ, এই দুটি বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে কোনো মতপার্থক্য নেই। এই দুটি নিয়ে কতটুকু অগ্রগতি হলো সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা আপাতত দিতে পারছি না। এটুকু বলতে পারি, সংস্কার কমিশনের যে ৪৭টি সুপারিশ রয়েছে তা যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে আদর্শ ও স্বাধীন দুদক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তবে নির্ভর করবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে কি না সেটার ওপর। ওটা না হলে যতই আইন পরিবর্তন হোক না কেন, বাস্তবে কার্যকর হবে না। এর আগে দুদক ও টিআইবি পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য ২০১৫ সালের ২৫ মে দুই বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক সম্পাদন করেছিল। পরে ২০১৭ সালের ৫ জুন দুই বছর চার মাস মেয়াদি, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর তিন বছর মেয়াদি এবং ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তিন বছর মেয়াদি চার দফায় সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০৩০ পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি পঞ্চম দফা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
এনডি