ঢাকা: মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িত নয়ন-পিয়াস বাহিনীর অন্যতম সহযোগী মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আবুল কালামকে অস্ত্র, গুলি ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। তিনি ৩০টি মামলার আসামি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, র্যাব-১১ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন দুর্ধর্ষ অস্ত্রধারী সন্ত্রসী ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা নজরদারি চলমান ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িত মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আবুল কালামকে অস্ত্র, গুলি ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত ২৫ আগস্ট বিকেল আনুমানিক ৫টার পর মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা ও গুয়াগাছিয়া অস্থায়ী ক্যাম্পের পুলিশ যৌথভাবে মেঘনা নদীতে একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে সরকারি স্পিডবোটযোগে গজারিয়া থানাধীন গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত জামালপুরের মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় পৌঁছানোমাত্র পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বুঝতে পেয়ে নয়ন-পিয়াস এবং গ্রেপ্তার আসারি আবুল কালামের নেতৃত্বে প্রায় ৪০-৫০ জন ডাকাত সদস্য ৪ থেকে ৫ টি হাইস্পিডি ট্রলারে এসে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল এবং চতুর্দিক হতে গুলি বর্ষণ করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। পুলিশের বাধার মুখে পতিত হয়ে ডাকাত সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদী ও শাখা নদীতে অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি করে আসছে নয়ন, পিয়াস ও আবুল কালাম বাহিনীর সদস্যরা। গত এক বছরে নদীতে কয়েক দফা গোলাগুলিতে স্থানীয় কয়েকজন তাদের হাতে খুন হন। তাদের ভয়ে এলাকার শতাধিক পরিবার গ্রাম ছাড়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে হামলার ঘটনায় জড়িত নয়ন-পিয়াস বাহিনীর অন্যতম সদস্য এবং হত্যা, ডাকাতি, মাদক অপহরণসহ ৩০ মামলার আসামি মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আবুল কালামকে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানাধীন মোল্লাকান্দি থেকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তার হেফাজত থেকে একটি পাইপগান, দুটি বুলেট, একটি টাকা গণনার মেশিন, বিভিন্ন দেশের মুদ্রাসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, আসামি আবুল কালামের নামে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যা, একটি ডাকাতি, চারটি বিস্ফোরক, একটি চাঁদাবাজি, তিনটি মাদক ও ১৮টি অন্যান্য মামলাসহ মোট ৩০টি মামলা রয়েছে।
এর আগেও র্যাব-১১ কর্তৃক পৃথক তিনটি অভিযানে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও পাঁচজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক।
এসসি/এইচএ/