ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণে প্রথম চিঠির বাহক সঞ্জুর ৪র্থ মৃত্যুবাষিকী বুধবার

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১২
পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণে প্রথম চিঠির বাহক সঞ্জুর ৪র্থ মৃত্যুবাষিকী বুধবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ৭১’সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী প্রথম আত্মসমর্পণ করে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী কামালপুর গ্রামে। আর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে আত্মসমর্পণের সেই চিঠি নিয়ে গিয়েছিলেন আনিসুল হক আকন্দ।



বুধবার আনিসুল হক আকন্দ (সঞ্জু) বীর প্রতিকের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৮ সালের ১৫ আগস্ট হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন অসীম সাহসী এ যোদ্ধা।

তখন কামালপুরে ছিল পাকবাহিনীর শক্ত অবস্থান। কিন্তু সেখানেও তাদের বেকায়দায় ফেলে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় সিদ্ধান্ত হয় তাদের আত্মসমর্পণ করানোর। কিন্তু আত্মসমর্পণের সেই চিঠি নিয়ে গিয়ে আর ফিরলেন না বশির আহামেদ নামের এক মুক্তিযোদ্ধা। তাই পরেরবার সেই চেষ্টায় ভয় একটু বেশি।

কিন্তু এবার এগিয়ে এলেন আনিসুল হক আকন্দ। সহযোদ্ধাদের কাছে যিনি সঞ্জু নামে সমাধিক পরিচিত। তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন ১১ নম্বর সেক্টরের সুইসাইড স্কোয়াডে। এতকিছুর পরও তার ফিরে আসা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উদ্বেগের কমতি ছিলনা। কিন্তু তিনি সফলভাবে ফিরলেন। আর সহযোদ্ধাদের জানালেন পাকহানাদাররা আত্মসমর্পণে রাজি আছে। আটককৃত বশিরও আছে তাদের কাছেই। আর তাতেই রচিত হলো ইতিহাস। ৪ ডিসেম্বর পাকহানাদারার প্রথম আত্মসমর্পণ করে সেই কামালপুরে।

প্রয়াত আনিসুল হকের বরাত দিয়ে তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন বাংলানিউজকে জানান, সেসময় তিনি প্রায়ই যুদ্ধে যেতেন বুকে গ্রেনেড বেঁধে। কারণ যুদ্ধ ক্ষেত্রে মৃত্যু হলে যেন সাথে নিয়ে মরতে পারেন বেশকিছু পাকসেনাকেও।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, একাত্তর সালে এসএসসি পরীর্ক্ষাথী আনিসুল হক আকন্দ ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহন্দ্রেগঞ্জ সাব সেক্টরে যোগ দেন। ৩১ জুলাইয়ের যুদ্ধসহ অংশ নেন বেশ কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য পান বীরপ্রতিক খেতাব।

অসীম সাহসী এই যোদ্ধার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলের লংপুর গ্রামে। তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি স্ত্রীকে নিয়ে থেকেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার খড়মপুর গ্রামে।

স্বাধীনতার পর বেশ কয়েকবছর বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ করপোরেশনের নিরাপত্তা বিভাগে চাকরি করেন তিনি। তাঁর বাবার নাম আব্দুল আজজি আকন্দ, মা নেয়ামত ভানু।

স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন বাংলানিউজকে আরও জানান, স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার দেখে যাওয়াই ছিল তার শেষ ইচ্ছা। তাদের আস্ফালনের কারণে মৃত্যুর চারবছর আগ থেকে তিনি কোন রাষ্টীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন না।

তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আখাউড়ার বাড়িতে দোয়াসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১২
সমীর চক্রবর্তী/সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।