ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৪
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২ মানবা পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

ঢাকা: উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে নৌকায় করে ইতালিতে মানব পাচারের সময় তিউনিসিয়া উপকূলে ৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় পাচারকারী চক্রের মূলহোতা এবং হত্যা মামলার পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—যুবরাজ কাজী (২৪) ও কামাল (৩৮)।

তাদের কাছ থেকে একটি ভিসা কার্ড এবং নগদ ৭ হাজার ১৬৪ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে র‍্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, প্রবাসে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটকে পুঁজি করে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী সংঘবদ্ধ চক্র বিদেশে কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষদের প্রতারিত করছে। ইতালিতে মানব পাচারের ঘটনায় মামলার বাদী সুনীল বৈরাগীর ছেলে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগীকে বিদেশে যাওয়ার জন্য পূর্বপরিচিত আসামি যুবরাজ কাজী প্রস্তাব দেন। যুবরাজ কাজীর বাবা মো. মোশারফ কাজীর মাধ্যমে বৈধপথে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করবে, বিনিময়ে ১৪ লাখ টাকা দিতে হবে। মোশারফ কাজী বর্তমানে লিবিয়া অবস্থানরত। এই প্রস্তাবে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগী রাজি হয়ে গত বছরের ১৭ নভেম্বর গোপালগঞ্জস্থ নিজ বাসায় যুবরাজ কাজীর হাতে নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও পাসপোর্ট জমা দেন।

পাসপোর্ট ও টাকা দেওয়ার কিছুদিন পর যুবরাজ কাজী সমস্ত কাগজপত্র তৈরি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের বাকি টাকা দিতে বলেন। এরপর যুবরাজ কাজী গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ইতালি যাওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগীকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসেন। বিমানবন্দরের মেইন গেটে ঢোকার আগেই গাড়ি থেকে নামার আগে সজল বৈরাগীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নেন। বিমানবন্দরে রাতে অবস্থান করে ৩১ ডিসেম্বর ভোর ৬টার দিকে আকাশপথে ইতালির উদ্দেশে দুবাই রওনা করেন সজল বৈরাগী। পরে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি গোপালগঞ্জস্থ নিজ বাসায় সজল বৈরাগীর পরিবারের সদস্যরা নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা দেন যুবরাজ কাজীকে।

এএসপি মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভুক্তভোগীদের পরিবার জানতে পারে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে ভূমধ্যসাগরে ইতালির উদ্দেশে গমনকারী একটি ডিঙ্গি নৌকা তিউনিশিয়া উপকূলে ডুবে যায় এবং অনেক প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে সজল বৈরাগীসহ বাংলাদেশি ৮ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়। পরে মৃত সজলের বাবা বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা রুজুর পর র‌্যাব-১ এর কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর ফলে র‌্যাব-১ আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (২১ এপ্রিল) রাতে র‌্যাব-১ ও র‍্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানাধীন রাঘদী ইউনিয়ন এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় যুবরাজ কাজী ও কামালকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৪
এসজেএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।