ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যমুনায় তলিয়ে গেছে স্কুল, নতুন ভবন হয়নি ৩ বছরেও

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
যমুনায় তলিয়ে গেছে স্কুল, নতুন ভবন হয়নি ৩ বছরেও খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

সিরাজগঞ্জ: প্রায় তিন বছর আগে প্রমত্তা যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রকল্পও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ভবন তৈরি না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে চলছে এ বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম।  

কনকনে শীতের মধ্যেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগে। তবে এ অঞ্চলে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নেমে আসায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২২ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালে যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে চৌহালী উপজেলার ভুতের মোড়ে অবস্থিত পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চরসলিমাবাদ দক্ষিণপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে টিনের ছাপরা ঘর তুলে শুরু হয় পাঠদান কার্যক্রম।  

এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-৪ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। উমারপুর ইউনিয়নের পয়লা চরে পাঁচটি কক্ষবিশিষ্ট টিনের ঘরটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। ৬ মাসের মধ্যে ওই ঘরটি নির্মাণের কথা থাকলেও গত দেড় বছরে তিন ভাগের এক ভাগ কাজও করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।  

এদিকে ভাড়া নেওয়া ওই ছাপরা ঘরটি ছেড়ে দিয়ে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের পাশে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির। ফলে প্রচণ্ড শীতের মধ্যেই কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের।  

স্থানীয় বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে কেউ কেউ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।  

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেহেনা পারভিন জানান, নদীতে স্কুল বিলীনের পর থেকে টিনের ছাপরা ঘর তুলে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। ঘর না থাকায় বই, হাজিরা খাতা, টেবিল, চেয়ার, ব্ল্যাকবোর্ড, গুরুত্বপূর্ণ ফাইলসহ আসবাবপত্র বাইরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম জানান, ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে। ঘরের স্ট্রাকচার তৈরি করেই ঠিকাদার উধাও হয়েছে এখনও ঘরের মূল কাজ বাকি।  

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসকে টিমবারের মালিক মো. কোহিনূর জানান, একসঙ্গে দুইটি স্কুলের কাজ করায় বেশি সময় লাগছে। আশা করছি মার্চ মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, স্কুলটি নদীতে বিলীন হওয়ায় পয়লা চরে টিনের ছাপরা ঘরে পাঠদান কার্যক্রম চলছে কিন্তু পাঠদানে কষ্ট হচ্ছে। সেখানে চর মডেলের একটি নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে। ঠিকাদারকে তাগিদ দিচ্ছি দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।