ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পরামর্শ আর সতর্ক করেই শেষ হলো অভিযান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৪
পরামর্শ আর সতর্ক করেই শেষ হলো অভিযান

ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের যৌথ টিম। তাদের মনিটরিং ও অভিযানের ফলে চালের দাম বর্তমানে নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মনিটরিং শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সেলিমুল আজাম। অভিযানে নেতৃত্ব দেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কুল প্রদীপ চাকমা।

এদিকে তদারকি কার্যক্রমের শুরুতে অনেক ব্যবসায়ী দোকান থেকে সটকে পড়েন। অবশ্য অন্যরা দাবি করেন, দোকানদাররা সকালের নাস্তা করতে গেছেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কুল প্রদীপ চাকমার নেতৃত্বে পরিচালিত এ তদারকি কার্যক্রমে খুচরা বাজারে চালের বিক্রয়মূল্য ক্রয়মূল্যের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করা হয়। চালের দামের ভিন্নতা যাচাই করে ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা বজায় রাখতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

খাদ্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিংকালে দোকানে প্রদর্শন করা চালে কোনো প্রকার ট্যাগ দেখা যায়নি। ফলে প্রদর্শন করা চাল কোন জাতের তা ক্রেতার অভিজ্ঞতা ও বিক্রেতার মুখের কথা ছাড়া নির্ধারণের কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় ক্রেতারা বিভ্রান্ত হতে পারেন উল্লেখ করে ট্যাগ লাগানোর নির্দেশ দেন অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা। চাল প্রদর্শনে বাটি কিনতে পারলে কাগজে ট্যাগ লাগাতে সমস্যা কোথায় জানতে চান তারা।

এদিকে মূল্যতালিকায় নির্দিষ্ট জাতের চালের একটি দাম উল্লেখ করলেও কোয়ালিটি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রয় করতে দেখা গেছে। দামের পার্থক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা জাত একই হলেও কোয়ালিটি ও মিলের দামের কথা জানান। এ অবস্থায় অভিযান পরিচালনাকারী দল এ ধরনের ঘটনায় আলাদা আলাদাভাবে মূল্যতালিকায় দাম উল্লেখের নির্দেশ দেন।

অভিযানকালে অনেক দোকানের ফুড লাইসেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণ দেখা যায়। খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের লাইসেন্স নবায়নের পরামর্শ দেন। এ সময় চালের বিক্রয়মূল্যে অধিক লাভ করার প্রমাণও পায় কর্মকর্তারা। অনেক দোকানে ৫৫ টাকা কেজি দরে আটাশ চাল কিনে ৫৮ টাকায় বিক্রয় করছে। তারা দূরের কোনো পাইকার থেকে না কিনে পাশের দোকান থেকে চাল সংগ্রহ করেছেন। অতি লাভ করছেন কিনা জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা লেবার খরচের কথা উল্লেখ করেন। এতে বস্তাপ্রতি ১০ টাকা লেবার খরচের কথা জানান তারা।

এ ছাড়া দোকানি জনতা রাইস এজেন্সি থেকে চাল ক্রয়ের কথা জানান। যদিও ওই পাইকারি দোকানে আটাশ চালের কেজি ৫২ টাকা উল্লেখ করা রয়েছে। তবে দোকানিকে নিয়ে জনতা রাইস এজেন্সিতে গেলে তারা ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রয়ের কথা জানান। একইসঙ্গে আটাশ হলেও এটি উন্নতমানের উল্লেখ করেন। এ অবস্থায় খাদ্য কর্তৃপক্ষ যার যার স্টোরকে অধিক লাভ না করা ও জনতা রাইস এজেন্সিকে মানের ওপর ভিত্তি করে মূল্যতালিকা প্রদর্শনের জন্য সতর্ক করে।

বাজার তদারকি প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কুল প্রদীপ চাকমা বলেন, আমরা দেখেছি কয়েকটি দোকানে নাম ভেদে চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। আবার যারা বস্তা কিনছেন, তাদের থেকে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। সবমিলিয়ে চালের বাজারে আমরা একটা অসামঞ্জস্যতা পেয়েছি। আমরা তাদের নতুন করে চালের দাম লিখে দিতেও বলেছি।

তিনি বলেন, আমাদের আজকের মনিটরিং ছিল শুধুমাত্র সচেতন করার জন্য। এরপরও যদি তারা ঠিক না হয়, তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনো ভোক্তা অতিরিক্ত দামে চাল কেনেন, এক্ষেত্রে তিনি চাইলে ভোক্তা অধিদপ্তরে মামলা করতে পারেন। এমনকি ভ্রাম্যমাণ আদালতকে যদি কোনো ভোক্তা অভিযোগ জানান, তাহলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন...
দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে পাইকারি-খুচরা বাজারে অভিযান

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৪
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।