ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাদর দিয়ে দোকানের শাটার ঢেকে চুরি করতেন তারা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
চাদর দিয়ে দোকানের শাটার ঢেকে চুরি করতেন তারা 

বরিশাল: চোরের দশ দিন গেরস্থের একদিন। বরিশালে মোবাইলের দোকানে লুটপাটকারীদের একাংশ অবশেষে ধরা পড়েছে জনতার হাতে।

চোর চক্রটি অভিনব কায়দায় বিছানার চাদর দিয়ে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে শাটার ঢেকে তালা ভেঙে চুরি করতো। বেশ কয়েকবার চুরি করে পার পেলেও এবার আর রক্ষা হয়নি। চক্রের দুই সদস্য এখন পুলিশের জালে। বাকিদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।  

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরের কাকলীর মোড় এলাকায় ‘মোবাইল ফর ইউ’ নামক দোকানে তালা ভেঙে চুরির সময় চক্রের দুই সদস্যকে আটক করে স্থানীয়রা।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সকালে মোবাইল ফর ইউ শপের সামনে সাতজনের একটি দল ঘোরাঘুরি করছে। কিছুক্ষণ পর চাদর দিয়ে দোকানের একটি শাটার ঢেকে দেয় তারা। শাটার ভেঙে দোকানের ভেতরে দুজন প্রবেশ করে লুটপাটের প্রস্তুতি নিলেও বিধিবাম। টের পেয়ে আশপাশের জনতা দোকানটিকে ঘিরে ফেলে। পরে পুলিশ এসে দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটক ফারুক ও রাজু দুইজনই চাদর পার্টি চোর চক্রের সদস্য। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলায় বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার এএসআই মো. হানিফ।

পুলিশের হাতে সোপর্দ করার আগে ফারুক ও রাজুকে স্থানীয়রা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন তারা জানান, তাদের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন ছিলেন। তারা বাইরে নজর রাখছিলেন। তবে স্থানীয় নাইটগার্ড হানিফ বিষয়টি টের পেয়ে গেলে তারা পালিয়ে যান।

নাইটগার্ড হানিফ জানান, ঘটনার সময় তিনি কাছাকাছিই ছিলেন। হঠাৎ তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছে আসলে দেখতে পান দোকানের বাইরের তালা ভাঙা ও ভেতরে লোক প্রবেশ করেছে। তখনই স্থানীয়দের ডাক দিয়ে জড়ো করেন এবং থানা পুলিশ ও দোকান মালিককে মোবাইল ফোনে জানান। পুলিশ এসে দোকানের ভেতর থেকে চোর চক্রের দুই সদস্যকে হাতেনাতে আটক করে।

এ ব্যাপারে দোকানটির মালিক জিয়াউর রহমান বলেন, নাইট গার্ডের সতর্কতার কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখ থেকে বাঁচলেও কোনো কিছু খোয়া গেছে কি না তা এখনই বলতে পারছি না। এমনকি মোবাইল সেটগুলো দেখে মনে হচ্ছে ঠিক আছে।

এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ- কমিশনার মো. ফজলুল করিম বলেন, সাতজনের চক্রটি চাদর ব্যবহার করে চুরি করতে এসেছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।  তবে সব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

চলতি বছরের ৬ এপ্রিল একই স্টাইলে নগরের বগুড়া রোড এলাকার জননী মোবাইল শপ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটে। বরিশাল মহানগর ও জেলায় এমন কায়দায় পাঁচটি চুরির ঘটনা ঘটে।

এমনই চুরির শিকার জননী মোবাইল শপের মালিক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনার পরপরই থানা পুলিশের সহায়তা নিলেও এখন পর্যন্ত সেই ঘটনায় কাউকে আটকের খবর নেই। আর তার মতো ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, পুলিশের উদাসীনতায় চোর চক্রটি বারবার সুযোগ নিচ্ছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী জানান, আটক দুজনের মধ্যে ফারুকের নামে মেট্রোপলিটন এলাকার দুটি থানায় দুটি মামলা রয়েছে।  তবে তিনি চুরি করেই আত্মগোপনে চলে যেতেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।